অনলাইন ডেস্ক : রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে হলে জনগণকে রাজনৈতিক সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত সম্মিলিত প্রতিরোধ জারি রাখতে হবে সব স্তরে। স্বপ্নের বাংলাদেশ পেতে হলে লড়াকু অস্তিত্বসচেতন মানুষদের নিরন্তরভাবে থাকতে হবে। স্বাধীন বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার রায়ের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কার’ নিয়ে আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তাঁরা বলেন, কোনো রাজনৈতিক সরকার স্বাধীন বিচার বিভাগ চায়নি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গ্রিন রোডে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল) প্রধান কার্যালয়ে এই সভার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
স্বতন্ত্র বিচার বিভাগ চায়নি : বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুমিন ফারহানা বলেন, “স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় মাসদার হোসেন মামলার ১২ দফা নির্দেশনা কোনো রাজনৈতিক সরকার (আওয়ামী লীগ-বিএনপি) মানেনি। কারণ কোনো রাজনৈতিক সরকার কখনো চায় না বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করুক। রাজনৈতিক সরকার কখানো চায় না, বিচার বিভাগ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘রাজা তুমি অপরাধ করেছে’ এ কথা বলার সাহস করুক। রাজনৈতিক সরকার কখানো চায় না বিচার বিভাগ প্রশ্ন তুলুক, ভিন্নমতের বা ভিন্নদলের লোকদের বিরুদ্ধে কেন মামলাগুলো হচ্ছে। এ রকম বিচার বিভাগ আমাদের রাজনৈতিক সরকারগুলো কোনো দিনও চায়নি।”
বিচার বিভাগে ভয়াবহ বল প্রয়োগ হয়েছে : সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘অধস্তন আদালতের পাশাপাশি উচ্চ আদালতও সব সময় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে ছিল। উচ্চ আদালতে রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে কখনো বিচারক নিয়োগ হয়নি।’ বিচার বিভাগ নিয়ে এখন নৈরাজ্য শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ, বিচারপতিদের সম্মান-মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব যেমন আইনজীবীদের, নাগরিকদের, তেমনি বিচারপতিদেরও।
শিক্ষার্থীরা বড় একটা ভূমিকা পালন করেছে সরকার উত্খাতের ক্ষেত্রে। কিন্তু সব কিছু পরিবর্তনের জন্য যেভাবে বল প্রয়োগের নীতিটা এখন শুরু হয়েছে, তা থেকে বের হয়ে আসা জরুরি। এ ধরনের সংস্কৃতি বিচার বিভাগকে সবল করছে না বরং আরো দুর্বল করছে। বিচার বিভাগ যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দাঁড়াতে পারছে না, সেটাতে এই বল প্রয়োগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে হাইকোর্টের ১২ জন বিচারপতিকে বেঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তিনি।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস