একটি বেসরকারি এয়ারলাইনসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. নাজমুল হক বলেন, ‘ব্র্যান্ডের কারণে দামটা একটু বেশি থাকে। লোকাল মার্কেটের চেয়ে এখানে দাম বেশি হবে। কিন্তু মানটা ভালো থাকে।’ দেশের বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে হাতিল ফার্নিচার। সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে হাতিলের ফার্নিচার। ভারত, নেপাল ও ভুটানে বিশাল বাজার দখল করে আছে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এই ব্র্যান্ডটি। হাতিল ফার্নিচারের রিটেইল অপারেশন ম্যানেজার লায়লা ইসরাত জাহান রুশী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফার্নিচারের ক্ষেত্রে আমরা ভালো মান নিশ্চিত করি।
হাতিল একটা ব্র্যান্ড, এখানে মান নিয়ন্ত্রণের একটা ব্যাপার আছে। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। কাঠের পাশাপাশি আমরা মেটালের কিছু পণ্য নিয়ে এসেছি। আমরা ফরেস্ট স্টুয়ার্ডশিপ কাউন্সিলের (এফএসসি) সার্টিফায়েড কাঠ ব্যবহার করছি। অর্থাৎ বনায়ন ধ্বংস করে এমন কাঠ ব্যবহার না করে পণ্য তৈরি করছি। আর কাঁচামাল যেগুলো আমরা ব্যবহার করি সেগুলো আমদানি করে নিয়ে আসা। ফলে ওখানে খরচ বেশি হয়। আমাদের পণ্যের মান, ফিনিশিং, ডিজাইন ও সর্বোচ্চ গ্রাহকসেবা দেওয়ার ওপর পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়।’
ফার্নিচার রপ্তানি
একসময় ফার্নিচার বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এখন নিজেরাই সব ধরনের আসবাব তৈরি করছেন। চেষ্টা করছেন ডিজাইনে আধুনিকতা নিয়ে আসতে। ফলে এই খাতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ শ্রমজীবী, যা গার্মেন্টসশিল্পের অর্ধেক। কিন্তু সে তুলনায় রপ্তানি আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। গত অর্থবছরে মাত্র ১২০ মিলিয়ন ডলার এই খাত থেকে আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।
আর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ফার্নিচার খাতের সমস্যা, সুযোগ ও বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়ানো নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির দেওয়া ২০২২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ছোট-বড় প্রায় ৪০ হাজার ফার্নিচার প্রস্তুত ও বিক্রির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই নন-ব্র্যান্ড।
২০১২-১৩ অর্থবছরে ফার্নিচার খাতের রপ্তানি ছিল ৩১.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ বছর পর ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৬১টি দেশে ফার্নিচার রপ্তানি করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, যা মোট আয়ের ৫০ শতাংশ।
একইভাবে জাপান থেকে ১৬ শতাংশ, ফ্রান্স থেকে ৯ শতাংশ, ভারত থেকে ৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩ শতাংশ, কানাডা ও সৌদি আরব থেকে ২ শতাংশ করে এবং অন্যান্য দেশে ৯ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজার প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলারের। সেই তুলনায় আয় খুব সামান্য হলেও ধারাবাহিকভাবে আয় বাড়ছে।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস