অনলাইন ডেস্ক : দুই ভাই। একজন মাঈন উদ্দিন আহমেদ, অন্যজন মিশু মিনহাজ। দু’জনই আবার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বিপণন প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) বেসরকারি মালিকানা অংশের পরিচালক। কোম্পানিতে প্রভাব বিস্তার নিয়ে তারা দ্বিধাবিভক্ত। এতে দুই ভাগ হয়ে আছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। দুই ভাইয়ের এমন দ্বন্দ্বে বেহাল এই তেল বিপণন কোম্পানি। বড় ভাই মাঈন উদ্দিন আহমেদ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোম্পানির হয়ে মামলাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিলেও ঠিক বিপরীত অবস্থানে ছোট ভাই মিশু মিনহাজ। একই অবস্থা কোম্পানির অর্থ আদায় মামলা (মানি স্যুট মামলা) নিয়েও। তাদের একজন মামলা করলে আরেকজন তা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। এ নিয়ে রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে বিপিসি।
জানা যায়, আইন উপদেষ্টা মেজবাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত করে দেখছে দুদক। এ ছাড়া মামলা প্রত্যাহারে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে মর্মে আপত্তি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও। প্রত্যাহার করা মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২৮টি মামলার মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা ১৬টি মানি স্যুট মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কয়েকটি মামলায় সিআইডি অভিযোগের সত্যতা পায় এবং কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগও করেন। এর পরও মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এসএওসিএলের পরিচালক মাঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অর্থ-সংক্রান্ত মামলা এবং অসদাচরণের অভিযোগে করা মামলা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া আমাদের আইন উপদেষ্টা কীভাবে প্রত্যাহার করে নিলেন, তা বোধগম্য হচ্ছে না। এমনকি মামলা প্রত্যাহার করা হলেও তা পরিচালনা পর্ষদকে জানানোও হয়নি।’ সম্পর্কে দুই ভাই হওয়ায় বিষয়টি পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত গড়িয়েছে কিনা– জানতে চাইলে মাঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এটা ঠিক, পারিবারিক কিছু ঝামেলা রয়েছে।’
এসএওসিএল পরিচালক মিশু মিনহাজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ও তাঁর কার্যালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কোম্পানির আইন উপদেষ্টা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘আদালতে যেসব মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে, সেগুলো দায়েরের ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছিল না। কোম্পানি কর্তৃপক্ষই এসব মামলা পরিচালনায় আগ্রহী নয়। এ কারণে মামলাগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় প্রত্যাহার হয়েছে।’
এদিকে, প্রতারণা ও কোম্পানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়টি দুদকের নজরে আনা হলে তারাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ঋণখেলাপি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আপত্তি জানিয়ে নোট দিয়েছেন বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস