অনলাইন ডেস্ক : সরকারের যেকোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আপনারা নির্ভয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন। সরকার সব ধরনের সহায়তা করবে। কিন্তু ভুল সংবাদ পরিবেশন হলে সেটা সরকারের জন্য এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
সঠিক তথ্যের জন্য সরকার গণমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে সঠিক ও নিরপেক্ষ তথ্য পৌঁছানো না হলে নানা রকম গুজব ছড়ায়। সঠিক তথ্য পৌঁছানোর জন্য সব সরকারই গণমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান সরকারের সেই নির্ভরশীলতা আরও বেশি। আমরা আশা করব, গণমাধ্যম সঠিক সংবাদ তুলে ধরবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে তিন দফায় সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়টি সরকারকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান সম্পাদকেরা। পাশপাশি গণমাধ্যমের নানা সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরেন তারা। মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেটশন কার্ড বাতিল ঠিক না। এরই মধ্যে সিপিজে (কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিষ্টস) বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমরাও উদ্বিগ্ন। যাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে তাদের অনেকেই পেশাদার সাংবাদিক। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’
সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা স্বভাবতই অনেক বেশি।’ পত্রিকায় প্রকাশিত সরকারি বিজ্ঞাপনের বিল পরিশোধের সময়টা আরেকটু এগিয়ে আনার কথা বলেন তিনি। প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমরা যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। সে সময় যারা সত্যের পক্ষে কাজ করেছেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করেছেন তাদের মাথার ওপরে সবসময় গরম নিশ্বাস ফেলা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা এখন আন্দোলনের সময়কার মতো সাংবাদিকতায়ও ঐক্যবদ্ধ আছি কিনা। সাইবার সিকিউরিটি আইন, অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনসহ অনেকগুলো আইন সংশোধন করা দরকার। প্রেস কাউন্সিল ও তথ্য কমিশনে সংস্কার প্রয়োজন।’
ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দেশ রুপান্তরের সম্পাদক মোস্তফা মামুন, দ্য ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মোর্তজা, ইত্তেফাকের চিফ রিপোর্টার শামসুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আব্দুল্লাহ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন। নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন ও সমকালের চিফ রিপোর্টার মসিউর রহমান খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারজানা মাহবুব।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস