অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে মহাখালী এলাকায় অবরোধের সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর কলেজে ফিরে গিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে এসে মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলে। কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার মাসুম সারোয়ার সমকালকে জানান, বিকেল চারটা ১০ মিনিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সকাল ১১টার অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায়।
বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে রাজশাহী কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস, তুরাগ কমিউটার, সিল্কসিটি, কালনী এক্সপ্রেস, জামালপুর কমিউটার ট্রেনের যাত্রার কথা ছিল চাপাইনাবগঞ্জ রাজশাহী কমিউটারের দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কমলাপুর থেকে যাত্রা করার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনটি ছেড়ে যায় বিকেল পাঁচটার দিকে। একই সময়ে ছেড়ে যায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। মহাখালীতে আটকা পড়া নোয়াখালীর উপকূল এক্সপ্রেস বিকেল তিনটা ১০ মিনিটে যাত্রা করার কথা ছিল।
বিকেল চারটা দিকে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কেউ প্ল্যাটফর্মে পত্রিকা বিছিয়ে শুয়ে বসেছিলেন, কারো জায়গা হয় বেঞ্চিতে। দুপুর দেড়টার বনলতা এক্সপ্রেসের যাত্রী আবু কাওসারের প্রশ্ন, শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ট্রেন বন্ধ কেনো যাত্রীদের জিম্মি করবে? আর কতদিন এমন নৈরাজ্য চলবে? জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান। এর আগে মাইকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, তাদের কর্মসূচি বিকেল চারটা পর্যন্ত। তাদের একটি দল আলোচনায় গিয়েছে। তারা ফিরে এলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ডাকা হয়। পরে বৈঠক করতে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন। ১২ সদস্যের এ দলে আছেন- মেহেদী হাসান, মাহামুদুল হাসান, জাহাঙ্গীর সানি, আমিনুল, নুর উদ্দিন জিসান, কাউসার আহমেদ, মোশারফ হোসেন, তোহা, নুর মোহাম্মদ, হাবিব উল্লাহ রনি, আব্দুল হামিদ এবং নিরব হোসেন।
আন্দোলনকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য হাবিব উল্লাহ রনি সমকালকে বলেন, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন তারা। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে কমিশন গঠনসহ গ্রহণযোগ্য ও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পেলে তারা কর্মসূচি স্থগিত রাখবেন। আর যদি সে ধরনের কোনো আশ্বাস সরকার না দেয়, তাহলে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে শিগগির নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি
তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো —
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে ৭ কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজকে পৃথক (আলাদা) করতে হবে।
২. তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করতে হবে।
৩. এবং তিতুমীরকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস