নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজার স্বর্ণমার্কেট থেকে নিখোঁজের ২২ দিন পর স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের লাশ উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার রাত এগারোটায় স্বর্ণ মার্কেটের পার্শ্ববর্তী আমলাপাড়া এলাকায় একটি চার তলা বাড়ির নীচ তলার সেফটি ট্যাংক থেকে তিনটি বস্তায় ভর্তি অবস্থায় প্রবীরের তিন টুকরা খন্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানিয়েছে, আর্থিক লেনদেনের বিরোধ নিয়ে এই হত্যাকান্ডে ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে নিহত প্রবীরের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার পিন্টু এবং বাপন ভৌমিক নামের এক স্বর্ণ কারিগরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পিন্টু ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার ভাড়াটে। তার ফ্লাটেই এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ডিবি পুলিশ ধারণা করছে।
রাত এগারোটার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল আমলাপাড়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় বাড়ির নীচ তলার সেফটি ট্যাংক থেকে একে একে তিনটি বস্তায় প্রবীরের তিন টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় নিহতের স্বজনরা এবং শত শত এলাকাবাসী বাড়ির সামনে এসে ভীড় জমান।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, গত ১৮ জুন প্রবীর চন্দ্র ঘোষ নিখোঁজ হলে পরিবারের জিডির ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে থাকে। কিন্তু পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি না হলে গত ৫ জুলাই বিষয়টি তদন্তের ভার দেয়া হয় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে সোমবার সকালে পিন্টু ও বাপন ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আটককৃতরা প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে বলে স্বীকার করে। পরে তাদের সাথে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ পিন্টর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রবীরের লাশ উদ্ধার করে। তিনি জানান, স্বীকারোক্তিতে আটককৃত দুইজন জানিয়েছে নিখোজ হওয়ার দিন পিন্টু ও বাপন প্রবীরকে পিন্টুর ফ্লাটে নিয়ে আসে। ওই ফ্লাটেই হত্যাকান্ডের পর প্রবীরের লাশ তিন টুকরা করে তিনটি বস্তায় ভরে সেফটি ট্যাংকে গুম করে। আর্থিক লেনদেনের বিরোধের জের ধরেই প্রবীরকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত প্রবীরের পরিবারের স্বজনরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। তারা এ ব্যাপারে থানা পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বলেন, পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে প্রবীরকে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতো।
গত ১৮ জুন রাত সাড়ে নয়টায় নগরীর বালুরমাঠ এলাকার নিজ বাসা থেকে কালিরবাজার এসে নিখোঁজ হন প্রবীর চন্দ্র ঘোষ। রাতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজের পরদিন ১৯ জুন প্রবীর ঘোষের বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রবীরের পরিবারের কাছে মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ ১ কোটি টাকা দাবী করে ।#