হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর আগামী ২৮ জুন ইরানে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রার্থী হওয়ার প্রকাশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ইরানি গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঘোষণা করেছেন- তিনি আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন। তারই সমর্থকদের পরিচালিত টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘দোলাত বাহার’-এ শনিবার এক ভিডিও বার্তায় আহমাদিনেজাদ বলেছেন, পরিবর্তনগুলো খুব ঘন ঘন হচ্ছে। এটা শুধু ইরান নয়, সারা বিশ্বেই। আমি আশা করি, আমরা শিগগিরই সুন্দর পরিবর্তন দেখতে পাব।
ইরানের বর্তমান পার্লামেন্টে আহমাদিনেজাদের বেশ কিছু সমর্থক রয়েছেন। তারা ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আহমাদিনেজাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে আহমাদিনেজাদ অন্যতম।
ইরানের পার্লামেন্টে তাবরিজ অঞ্চলের প্রতিনিধি আহমাদ আলীরেজা বেইগি বলেছেন, যদি মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে আমরা জয় পাবই।
তবে তিনি ২০১৭ ও ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আহমাদিনেজাদের প্রার্থিতা বাতিল করার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, আহমাদিনেজাদকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে গার্ডিয়ান কাউন্সিল তার প্রার্থিতার অনুমোদন দেবে। কারণ, তিনি যদি প্রার্থী হন এবং এই প্রার্থিতাও যদি বাতিল হয়ে যায়, তবে এটি খুব বাজে পরিণতি নিয়ে আসবে।
বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ২০১৭ সালে আহমাদিনেজাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল। ওই সময় তিনি পুরো কাঠামোর সমালোচনা করেন। এমনকি প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিরও সমালোচনা করেছিলেন। এসব কারণে আহমাদিনেজাদ গত দুই বছর ধরে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ অনুগতদের রোষানল এড়াতে বেশিরভাগ সময়ই নীরব থেকেছেন।
আহমাদিনেজাদ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর আগে তিনি তেহরানের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। এ ছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও কঠোর অবস্থানে ছিলেন তিনি।