নবীনগর থেকে মা. আ. লিটন : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় চতুর্থ পর্যায়ে আগামী ৫ জুন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ‘চেযারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিনটি পদে নির্বাচন জমে উঠেছে। নির্দলীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সাংসদ নিরপেক্ষ থাকায় সকল প্রার্থীরাই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।চেযারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন-সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস(ঘোড়া),কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু(কই মাছ),মোহাম্মদ শাহ আলম(কাপ পিরিচ),মোঃ ফারুক আহমেদ(আনারস),এইচ এম আল আমিন আহমেদ-(মটরসাইকেল), আবদুল মতিন(হেলিকপ্টার),মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (দোয়াত কলম),মোছাম্মৎ নুরুন্নাহার বেগম(টেলিফোন)।
ভাইস চেয়ারম্যান(পুরুষ)পদে-মোহাম্মদ খাইরুল আমিন(মাইক),মোহাম্মদ সাইফুল আলম ভূইয়া(তালা), সঞ্জয় সাহা(টিয়া পাখি), মোহাম্মদ এমরান হোসেন(বৈদ্যুতিক বাল্প), মোঃ মোশাররফ হোসেন সরকার(বই), সারোয়ার আহমেদ ভূইয়া পলাশ(টিউবয়েল), মেহেদী হাসান(চশমা),মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জীবন(পালকী), মোহাম্মদ মোমেনুল হক (উড়োজাহাজ)। ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)পদে-সাবিনা ইয়াছমিন পুতুল(কলস)’মাহমুদা আক্তার শিউলি(ফুটবল),মোছেনা বেগম'(প্রজাপ্রতি)।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে ঘোষনা দিয়েছেন, তিনি এ নির্বাচনে কোন হস্তপেক্ষ করবেন না, তার কোন প্রার্থী নেই,নির্বাচনটা হবে সম্পূর্ন অবাধ,নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত একটি অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন। তার এই ঘোষনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নির্বাচনে অংশগ্রহনকারি সকল প্রার্থী। কিন্তু নির্বাচনী মাঠে গুঞ্জন রয়েছে, চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় সাংসদ ভিন্ন মতাদর্শের কাউকে গোপনে সমর্থন দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি আরেকটি প্রচারণা রয়েছে, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ও মহিলা’র ক্ষেত্রে নাকি দু’জনের প্রতি সাংসদের সমর্থন রয়েছে।
কিন্তু এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে এসব গুঞ্জনের কোন সঠিক তথ্য প্রমান নেই। যারা এ সব গুঞ্জন গুজব রটনা ছড়াচ্ছেন তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। খবর নিয়ে জানা গেছে , যেখানে পুরো নির্বাচনে মাননীয় সাংসদ সম্পূর্ন নিরপেক্ষ রয়েছেন, সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান প্রশ্নই উঠে না। সাংসদ বলেন,এটা দলীয় কোন নির্বাচন নয়,সম্পূর্ন নির্দলীয়। সেখানে যে যার মত নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহন ও ভোট দিতে পারবে। ভোটারদের প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন, যার যেখানে খুশি পছন্দমত প্রচার প্রচারণা করবেন এবং কেন্দ্রে যাবেন স্বাধীনভাবে ভোট দিবেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে দুইজন প্রার্থী ফারুক আহম্মেদ বিএনপি সমর্থক ও আবদুল মতিন রয়েছেন জাতীয় পার্টি সমর্থক। স্থানীয় সরকারের নির্দলীয় এ নির্বাচনে অঞ্চলভিত্তিক একটি প্রভাব রয়েছে। উপজেলার প্রতিটি অঞ্চল থেকেই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছে। সে হিসাবে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে আবদুল মতিনকে বাদে বাকী ৭জনই হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রত্যেকেরই অঞ্চল ভিত্তিক নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তেমনি ভাইস চেয়ারম্যান(পুরুষ) ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে চিত্র একই। অঞ্চল ভিত্তিক প্রভাব থাকায় তারাও কারোর চেয়ে কোন অংশে কম নেই।
সাংবাদিকদের সাথে পৃখক পৃথক সাক্ষাৎকালে সকল পদের প্রার্থীরাই নির্বাচনে তাঁরা বিজয়ী হতে পারলে,নবীনগর উপজেলাকে সারাদেশের মধ্যে একটি ‘মডেল ও অত্যাধুনিক উপজেলা’ হিসেবে গড়ে তুলার লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা,কুটির শিল্প,কারিগরি শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আত্মসামাজিক উন্নয়নসহ এই উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নে তারা বর্তমান সাংসদের সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি পূর্বাঞ্চলের দিপু,পশ্চিমাঞ্চলের মাইনুদ্দিন আহম্মেদ,উত্তরাঞ্চলের জহির রায়হান,দক্ষিনাঞ্চলের আক্তারুজ্জামানসহ প্রায় ১০০ সাধারন ভোটারের কাছে প্রশ্ন ছিল কে হতে যাচ্ছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)?।
এ ক্ষেত্রে ভোটারও সচেতন, তারা বলেন,নির্বাচনটা নির্দলীয় অঞ্চলভিত্তিক হওয়ায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে কে বিজয়ী হবে বলা মুসকিল তবে যেহেতু দলীয় প্রভাব নেই সেখানে তাদের পছন্দমত যোগ্যপ্রার্থী দেখে তারা ভোট দিবেন। কিন্তু নির্বাচনী মাঠ জরিপের উপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চেয়ারম্যান পদে মুল লড়াই হবে মোঃ ফারুক আহম্মদ (আনারস) ও এইচ এম আল আমিন (মটরসাইকেল)এর মধ্যে। তৃতীয় স্থানে থাকতে পারে সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস(ঘোড়া)। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন,যে নির্বাচনী মাঠের খেলায় নির্বাচনের আগের দিন রাতেও যে কোন দিকে মোড় ঘুড়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে উপরওয়ালা যার কপালে এই রাজটিকা লিখে রেখেছেন তিনিই হবেন এ চেয়ারের মালিক। ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩১০জন।
নিউজ২৪/ সংবাদদাতা/ ইলিয়াস