MENU

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
  • ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১২ই রবিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, দুপুর ২:৫১
Search
Close this search box.
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান

ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান

প্রকাশিতঃ

রোববার সন্ধ্যায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ জন। তবে এ ঘূর্ণিঝড় দেশের ১৯টি উপকূলীয় জেলায় যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা গত আড়াই দশকের ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ভয়াবহ। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, রিমালের আঘাতে উপকূলীয় জেলাগুলো তছনছ হয়েছে।

ব্যাপকভাবেক্ষক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে-খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭ এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভা ৯১৪টি।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬। ৩৫ হাজার ৪৮৩টি বাড়িঘর সম্পূর্ণ এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি। উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। ওই সব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮ লাখের বেশি লোক আশ্রয় নেয়। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্যসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো

প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা।

বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এ দেশের মানুষ অসহায়ভাবে মরেছে একের পর এক বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। পাকিস্তনের সামরিক জান্তার কেউ দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্দশা দেখার জন্য আসেনি। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৬ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ কোটির বেশি মানুষ। অনেকে গত রোববারে ঘূর্ণিঝড়কে ১৯৯১ সালের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এ তুলনায় সারবত্তা থাকলেও গত ৩ দশকে দেশের সর্বত্র দালানকোঠা গড়ে ওঠা, বেড়িবাঁধ এবং আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধে অবদান রেখেছে। এ ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর এবং ফসল নষ্ট হওয়ার ঘটনা লাখ লাখ মানুষের জীবনে দুর্ভোগ বয়ে এনেছে। যা মোকাবিলায় কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়াসহ সরকারকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, কেবল খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় ৬১টি কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও আংশিক, কোথাও পুরোপুরি ধসে গেছে। গাছপালা ও বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। ফসলি জমি নোনা পানিতে তলিয়ে গেছে।

হাজার হাজার মাছের ঘের ও পুকুর ডুবে গেছে। বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দ্বিতীয় দিনেও কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।

ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম পর্যন্ত প্রায় পুরো উপকূলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রাজধানী ঢাকার অনেক রাস্তায় দীর্ঘ জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। রাজধানীতেও দুইজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, একজন বিদ্যুতের খুঁটি স্পর্শ করে, অন্যজন বিদ্যুতায়িত টিনের বেড়ার সংস্পর্শে এসে মারা গেছে।

বাংলাদেশকে বলা হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্ব্াস, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই এখানকার মানুষ টিকে আছে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সামনের দিনগুলোতে এসব দুর্যোগের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে তীব্রতা। এর প্রমাণও আমরা পাচ্ছি। ১৯৯১, ১৯৯৭, ২০০৭ ও ২০০৯ সালে বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল। তার পর প্রায় প্রতি বছরই এক বা একাধিক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে। এর মধ্যে আছে ঘূর্ণিঝড় মোরা, ফণী, বুলবুল, আম্ফান, ইয়াস, গুলাব, জোয়াদ, সিত্রাং ও সর্বশেষ রিমাল। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের এমন বাড়াবাড়ি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু? ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করেছিল উপকূল রক্ষাবাঁধগুলোকে আর উঁচু ও মজবুত করে গড়ে তোলা, উঁচু ও বড় ঢিবি তৈরি করে গবাদিপশু রক্ষার ব্যবস্থা করা এবং ব্যাপক সংখ্যায় আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য। কারণ দুর্যোগের সময়ও মানুষ গবাদিপশু ফেলে দূরে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায় না।

বাস্তবতা হলো-সাড়ে ৩ বছরমেয়াদের ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ ৭ বছরে অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। উপকূল রক্ষাবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পগুলোর প্রায় একই অবস্থা। কাজের মান নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন। না হলে ৫ থেকে ৭ ফুট জলোচ্ছ্বাসে এত বেশি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় কীভাবে? বাঁধের সুরক্ষা কিংবা দেখভাল করা নিয়েও রয়েছে উদাসীনতার অনেক অভিযোগ। এই সুযোগে কিছু লোভী ও প্রভাবশালী মানুষ বাঁধের ক্ষতি করে জমিতে নোনা পানি ঢোকায় বাগদা চিংড়ি চাষ করার জন্য। এসব স্থানে বাঁধ দ্রুত ভেঙে যায়।

উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা জরুরি। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস এলেই বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে কোটি কোটি গ্রাহককে কয়েক দিন ধরে অন্ধকারে রাখা কোনো যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নয়। আমরা মনে করি, অবিলম্বে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুততম সময়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে।

Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!