অনলাইন ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বারের মতো শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রপতি ভবনে আজ রোববার সন্ধ্যায় হতে চলেছে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল শনিবার দিল্লি এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া প্রতিবেশী দেশ ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও ছয় দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন। সেশেলসের উপরাষ্ট্রপতি আহমেদ আফিফও গতকাল দিল্লি এসেছেন। আজ দুপুরের মধ্যে একে একে উপস্থিত হবেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোগবে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে বিদেশি অতিথিরা নৈশভোজের আসরে যোগ দেবেন।
মালদ্বীপের নির্বাচনের পর সে দেশের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর এটাই হবে প্রথম ভারত সফর। দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে জানা গেছে, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশ–বিদেশের প্রায় ৮ হাজার বিশিষ্টজনকে। ফল প্রকাশের আগে ভাবা হয়েছিল নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের হ্যাটট্রিক উদ্যাপন করা হবে জনতার দরবারে। সে কারণে তাঁরই আমলে নতুনভাবে তৈরি কর্তব্য পথে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান করার প্রস্তাবও বিবেচিত হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি বরাবর ছুঁতে আগ্রহী ছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড।
নেহরু ১৯৫২, ১৯৫৭ ও ১৯৬২ সালের নির্বাচনে জিতে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিটি জয়ই ছিল নিরঙ্কুশ। কারও সহায়তা ছাড়াই তিনি সরকার গড়েছিলেন। মোদি সেখানে ব্যর্থ। হ্যাটট্রিকের বছরে তাঁকে জোট শরিকদের সাহায্য নিতে হচ্ছে সরকার গঠনের জন্য। প্রধানমন্ত্রী আরও চেয়েছিলেন ১৯৮৪ সালের ভোটে রাজীব গান্ধীর জেতা ৪১৩ আসন টপকে নতুন রেকর্ড গড়তে। চার শ পার স্লোগানের অন্য লক্ষ্যও ছিল তা। দুই ইচ্ছার কোনোটিই পূরণ না হওয়া এবং এই জয় ‘অসম্মানের ও পরাজয়তুল্য’ বলে প্রচারিত হওয়ায় কর্তব্য পথে শপথ গ্রহণের অভিলাষ ত্যাগ করতে হয় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছাকাছি বিশাল তল্লাটকে ‘নো ফ্লাই জোন’–এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিমান তো দূরের কথা, ফানুস বা ড্রোনও ওই এলাকায় ওড়ানো বা চালানো যাবে না। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হবে আজ সন্ধ্যা সোয়া সাতটায়। তখনই বোঝা যাবে প্রথম দফায় মোট কতজন পূর্ণ মন্ত্রী ও কতজন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন এবং কোন দলের কতজন মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন। শপথ গ্রহণের পর নতুন মন্ত্রীদের কে কোন দপ্তর পাচ্ছেন, তা সরকারিভাবে জানানো হয়। গত শুক্রবার থেকেই শরিক নেতারা তাঁদের চাহিদার বিষয়টি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন।
টিডিপি তিন থেকে চারটি মন্ত্রণালয় চাইছে, যার মধ্যে অন্তত দুজন হবেন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পূর্ণ মন্ত্রী। সংসদে টিডিপির মোট সদস্যসংখ্যা ১৬। জেডি–ইউর দাবিও দুই পূর্ণ মন্ত্রীর। বিজেপি আবার প্রধান চার মন্ত্রণালয়ের একটিও কাছছাড়া করতে চায় না। অর্থ, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা—প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই চার মন্ত্রীই হচ্ছেন নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত–সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির সদস্য। সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ওই পাঁচজনেই নিয়ে থাকেন। বিজেপি চায় না সেখানে ভিন দলের কেউ দখল নিক।
নিউজ২৪/ সংবাদদাতা/ ইলিয়াস