আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৫শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৭:৪৩
ঝুট ব্যবসা থেকে কারখানার নিয়ন্ত্রণ জাহাঙ্গীরের হাতে

ঝুট ব্যবসা থেকে কারখানার নিয়ন্ত্রণ জাহাঙ্গীরের হাতে

প্রকাশিতঃ

অনলাইন ডেস্ক : নিউ টাউন নিটওয়্যার কম্পানিতে (এনটিকেসি) বিভিন্ন সময় শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ ও নানা সমস্যা সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানটির পুরো নিয়ন্ত্রণ নেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অবস্থিত কোরিয়ান মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে মেয়র হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। কম্পানির শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের নামে নেওয়া শতকোটি টাকার ঋণের অর্থও হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর সুযোগসন্ধানী।

কোরিয়ান মালিক লির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ‘সুই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়েছেন’ তিনি। প্রতিষ্ঠানটির ঝুটের ঠিকাদার থেকে পুরোটা দখলে নিয়েছেন। আর্থিক দুরবস্থায় ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে সেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন জাহাঙ্গীর। এখন প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা দেশছাড়া হওয়ার পর রাতের আঁধারে মূল্যবান যন্ত্রপাতি বিক্রি করে দিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে যাত্রা শুরু করে এনটিকেসি। শুরু থেকেই সুনাম ছিল প্রতিষ্ঠানটির। পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করলেও মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন-ভাতা পরিশোধ করত প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৮ সালে স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ী আনোয়ার চিশতিকে গুলি করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন জাহাঙ্গীর আলম।

এরপর ২০১৬ সালে গ্যাসসংকটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আর্থিক সমস্যায় পড়ে কম্পানিটি। তখনই শ্রমিকদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিল বকেয়া পড়তে শুরু করে। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে বকেয়া আদায়ে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ান জাহাঙ্গীর।

তখন তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিভিন্ন সময় টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতেন। অগ্রণী ব্যাংক থেকে প্রায় শতকোটি টাকার ঋণও গ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নেন জাহাঙ্গীর। ২০২১ সালে চার মাসের বেতন বকেয়ার সুযোগ নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ ঘটান। বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে নেন ১০০ কোটি টাকা। এরপর জাহাঙ্গীর শ্রমিকদের তাঁর বাসায় ডেকে নেন।

সেখানে এক মাসের বেতন পরিশোধ করে চার মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে মর্মে একটি ফরমে সই নেওয়া হয়। এ কারণে অনেক শ্রমিক বেতন নিতে অস্বীকারও করেছিলেন। সব মিলিয়ে মোট শ্রমিকের ৩০ শতাংশের মতো এক মাসের বেতন পায়। ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেন জাহাঙ্গীর। ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

জাহাঙ্গীরের আগের নিউ টাউন নিটওয়্যার কম্পানিতে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আধনায়ার হোসেন চিশতী। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জোর করে কারখানা থেকে বের করে দেয়। এরপর আমি থানায় মামলা করতে যাই। থানা মামলা না নেওয়ায় আমি কোর্টে মামলা করি। ওই সময় ফ্যাক্টরিতে আমার প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার ঝুট ছিল। আদালত থেকে পণ্য সরিয়ে না নিতে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। কিন্তু জাহাঙ্গীর সেই পণ্য সরিয়ে নেয়। পরে আমাকে আর কারখানায় যেতে দেয়নি। সে কারখানায় ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর কারখানা অধঃপতনে যায়।’

এনটিকেসির সাবেক কর্মকর্তা ডাইং ইউনিটের জিএম বুলবুল  বলেন, ‘২০১৮ সালে কারখানার আর্থিক সংকট শুরু হয়। ওই সময় হাত বাড়িয়ে দেন জাহাঙ্গীর আলম। বিপদে উপকার করলেও পরে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটি গিলে খেয়েছেন। ওই সময় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এনটিকেসির পরিচালক পরিচয়ে আইডি কার্ড বানান, যা প্রতিষ্ঠানের সবাই জানত।’

১৮ বছর প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করা সিরাজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চার মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও কম্পানি কর্তৃপক্ষ পুনরায় কারখানা চালুর চেষ্টা করছিল। কিন্তু সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তিনি ব্যাংকের লোন নিয়ে কম্পানিকে আরো বিপদে ফেলেন। ব্যাংকের ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় কারখানা এখন খেলাপি।’

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলম প্রথমে ঝুটের ব্যবসা করতেন। পরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে জাহাঙ্গীর এই কম্পানি চালানোর দায়িত্ব নেন। কর্মচারীদের পক্ষে বেতন নিয়ে মালিকের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁর বাড়িতে ডেকে ৩০ শতাংশ শ্রমিককে এক মাসের বেতন দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ফ্যাক্টরির মূল মালিক যাঁরা, তাঁরা কেউ এখন দেশে নেই। সবাই এখন কোরিয়ায়। কারখানাটির দেখাশোনা করেন তাজউদ্দিন। তাজউদ্দিন জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ লোক। জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে রাতের আঁধারে কারখানা থেকে বিভিন্ন মূল্যবান মেশিনারিজ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।

 

নিউজ২৪/ সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!