লেখক দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘ্রীল : আমার ছাত্র রাজনৈতিক কালের সার্বক্ষনিক সহচর অনুজ প্রতিম স্বনামে পরিচিত “আজ রবিবার” নাটকের পরিচালক ও বহু নাটকের নির্মাতা “মনির হোসেন জীবন” অসময়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তার পরিবারে সকলের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘ্রীল
“মনির হোসেন জীবন নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন কুতুবদী (বড় বাড়ী) গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডা. এম এ আজিজ অব. পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের সার্ভিসেস দল পুলিশের হয়ে ফুটবল খেলতেন। বাবার হাত ধরেই জীবন আশির দশকে নরসিংদীতে সার্বিসেস দলে বাংলাদেশ আনসার দলের মাঠ মাতানো খেলোয়ার ছিলেন। পাশা—পাশি বিনোদন চর্চা করতেন উদিচী শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে।
পরবর্তীতে ঢাকাতে বাংলাদেশ থিয়েটারের মাধ্যমে মঞ্চ নাটকে জড়িত হন। ‘স্বাধীন থিয়েটার’নামে এই নির্মাতার একটা মঞ্চ নাটকের দল রয়েছে্ তার নির্দেশনায় মঞ্চে বেশ কিছু নাটক প্রদর্শিত হয়েছে এবং হচ্ছে। ১৯৯০ সাল থেকে তার চাচা চলচ্চিত্র পরিচালক বদিউল আলম খোকনের হাত ধরে চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। হুমায়ুন আহমেদের সহকারী হিসাবে আগুনের পরশমনি ছবিতে ও অন্যান্য পরিচালক সহ ১০/১২টি চলচ্চিত্রে সহকারী হিসেবে কাজ করেন। পরবতৃীতে ১৯৯৪ সালে প্যাকেজ ফোরাম আন্দোলনের সাথে জড়িত হন।
বিটিভির প্রথম প্যাকেজ ধারাবাহিক নাকট মামুনুর রশীদের ‘শিল্পী’ এবং হুমায়ুন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন জীবন। তার কাজের এবং মেধার দক্ষতা দেখে মরহুম হুমায়ুন আহমেদ তাকে ‘নহাশ’ চলচ্চিত্রের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ দেন। ২০০০ সাল থেকে জীবন তার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ‘স্বাধীন চলচ্চিত্র’ গঠন করেন। তার প্রযোজনা থেকে অসংখ্য নাটক নির্মান করেন।
এর মধ্যে সাদা কাগজ, বন্যার চোখে জল, অপ্রত্যাশিত প্রত্যাশা, অতঃপর নিঃস্বঙ্গতা, গানম্যান, বিবাহ সংকট, কোরবান আলীর কোরবানীসহ প্রায় শতাধিক নাটক র্নিমান করছেন। আলোচিত টেলিফ্লিমের মাধ্যে ঃ কালা গলার মালা, ঢুলি বাড়ী, হতাই, ফজর আলী, অজ্ঞান পার্টি, তুচ্ছ, কথা আছে, বংশ প্রদীপ, অহম, বাঙ্গালির বিয়ে, নিজের সংগে দেখা, তুমি এলে তাই, ফোর স্টুপিডসহ প্রচুর টেলিফ্লিম নির্মান করেন মনির হোসেন জীবন। অনেক ডকুমেন্টরী নির্মান করেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অনেক সম্মানাও পেয়েছেন তিনি।”
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস