আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২০শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:৫৬
‘বন্যায় আমার সব শেষ’

‘বন্যায় আমার সব শেষ’

প্রকাশিতঃ

অনলাইন ডেস্ক : বন্যার পানির প্রবল স্রোত এসে সরাসরি আঘাত হানে বসতভিটায়। পানির তোড়ে গাছপালাসহ ভিটার অর্ধেকটা বিলীন হয়ে যায় খালে। এরপর পানি আরও বাড়ে। সেই চাপে ভেঙে পড়ে বসতঘর। ভিটার সামান্য অংশ ঠিকে আছে। কিন্তু সেখানে থাকার আর উপায় নেই। তাই অন্যত্র ঠাঁই নিতে হয়েছে পুরো পরিবারকে। বন্যায় এমন অসহায়ত্বের শিকার হয়েছেন মুজিবুর রহমান (৬১)। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে।

১৭ জুন রাতে মুজিবুর রহমানের ঘরে পানি ঢোকে। চারদিকে পানি আর পানি। পরে স্থানীয় লোকজন নৌকা নিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। এরপর এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন তাঁরা। পানি কমলে সবাইকে নিয়ে আবার ঘরে ফিরবেন, এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু এই ঘরে তাঁদের আর ফেরা হয়নি। আসলে ফেরার উপায় নেই। বন্যায় ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। শুধু ঘর নয়, বন্যায় ভিটাও গেছে তাঁর।

মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় আমার সব শেষ। সড়কের পাশে আরেকটু জায়গা আছে। কিন্তু ঘর বানানো তো দূরে থাক, একটা খুঁটি গেড়ে যে মাটি দিমু, এই তৌফিক নাই।’ তিনি আরও বলেন, কৃষিকাজ করেই সংসার চলে তাঁর। স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ নয়জনের সংসার। বড় ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনিও টেনেটুনে সংসার চালান। এখন এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন পরিবার নিয়ে। ঘর কীভাবে বানাবেন, এই চিন্তায় দিশাহারা তিনি।

বন্যায় মুজিবুরের মতো আরও অনেকের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও আংশিক, কারও পুরোটাই বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। হাওরপাড়ের দরিদ্র মানুষেরা এসব ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি আবার বানাবেন বা সংস্কার করবেন, এই সামর্থ্য অনেকেরই নেই। সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের কাটাখালী বাজারে যাওয়ার আগে ডান পাশে মুজিবুর রহমানের বাড়ি। ১৫ বছর আগে এখানে ভিটা করেন তিনি। ২০২০ সালে পাকা খুঁটি দিয়ে টিনের ঘর বানিয়েছিলেন। ঘরটি সড়ক থেকে প্রায় ২০০ ফুট দূরত্বে। ঘরের উত্তরে সড়ক, দক্ষিণে হাওর। সড়কের একটি ছোট সেতুর নিচ দিয়ে খাল হয়ে সুরমা নদীর পানি নামে হাওরে। এই খালের পাড়ের মুজিবুরের ঘর।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ঘরটির বাঁশ ও টিন প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে আছে। ঘরের লোকজন সেগুলো সরানোর চেষ্টা করছিলেন। ভিটার বেশির ভাগই খালে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে যে এখানে ঘর তুলবেন, সেই অবস্থা নেই। মান্নারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা আজিজ বলেন, ‘মুজিবুর পরিবার নিয়া বড় বিপদে পড়ছে। বন্যা তারে পথে নামাই দিছে। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া ঘর করা তাঁর পক্ষ সম্ভব নয়।’
একই এলাকার লামাগাঁও গ্রামের রফিক আলী (৫০) ও আখলিছ আলী (৬০), উলুকান্দি গ্রামের আফলাতুন বেগমের (৪৫) ঘরও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা বলেন, হাওরের ঢেউয়ে ঘরের বেশি ক্ষতি করে। ঝোড়ো বাতাস হলে ঢেউ হয় বেশি। ঢেউয়ে ঘরের বেড়া তছনছ করে দেয়। রফিক আলী বলেন, ‘আমরা বর্ষায় হাওরে মাছ ধইরা দিন চালাই। এখন আগের মতো মাছও মেলে না। বড় কষ্টে আছি। এর মাঝে বন্যায় ঘরের বেড়া ভাঙছে। বাচ্চারা রাইতে ডরায়। খাইতাম পাররাম না, ঘর ঠিক করমু কিলা।’ সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বন্যার পানি নামছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়িঘরে ফিরছেন। স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সহায়তা পাবেন।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস
Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!