MENU

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
  • ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১২ই রবিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৮:১৪
Search
Close this search box.
চার ছাত্রনেতা যেভাবে চার খলিফা হয়ে উঠলেন

চার ছাত্রনেতা যেভাবে চার খলিফা হয়ে উঠলেন

প্রকাশিতঃ

অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুল আলোচিত পরিভাষা এটি। মূলত সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর এটির ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু কে এই পরিভাষার ব্যবহার শুরু করল, কেন করল- এ নিয়ে অনেক গল্প আছে, তবে সত্যিকার অর্থে আজও এর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে যতটুকু জানা যায়, ১৯৭০-৭১ সালে ছাত্রলীগের চার প্রখ্যাত চার নেতাকে সবাই রসিকতা করেই শেখ মুজিবের চার খলিফা বলে চিহ্নিত করত। কারণ, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য পাওয়া ওই নেতারা হলেন- আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাহজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও নুরে আলম সিদ্দিকী।

এর মধ্যে প্রথমজন তথা ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন বেশ আগেই মারা গেছেন। আজ মারা গেলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ। অন্যদিকে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় নেই এবং আওয়ামী লীগ থেকে জাসদে যাওয়া ডাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম রব জেএসডি নামের একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তার বক্তব্য, আমার জানা মতে, এটার একটা উৎস হতে পারেন বঙ্গবন্ধু। তিনি যেটা নিজ মুখে রাজনীতিতে সংবিধানিক দায়-দায়িত্বের খাতিরে বলতে পারতেন না বা পাকিস্তানিরা তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে; জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এই কারণে অনেক কথা তার হৃদয়তন্ত্রিতে ঝংকৃত হলেও তিনি প্রকাশ্যে বিবৃত করা থেকে বিরত থাকতেন। সেই কথাগুলো আমাদের কণ্ঠে প্রকাশ্যে ও নিঃসঙ্কোচে প্রতিষ্ঠিত হতো।

এই চার নেতার সান্নিধ্যে থেকেছেন ডাকসু সংগ্রহ শালায় দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বপালনকারী শ্রী গোপাল চন্দ্র দাস। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চার খলিফার দুই খলিফা চলে গেলেন। আগে চলে গেলেন আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আজ গেলেন শাহজাহান সিরাজ। বেঁচে রইলেন নুরে আলম সিদ্দিকী ও আ স ম আব্দুর রব।

তার মতে, চার খলিফা ছিল একেকটি নক্ষত্র। বিভিন্ন কারণে এক একটি নক্ষত্র একেক দিকে চলে গেলেও তখনকার সময়ে চারজন একসঙ্গে কাজ করেছেন। তখনকার দেশের প্রাণকেন্দ্র ডাকসুর মাধ্যমে পুরো দেশের ছাত্র সমাজকে তারা এক করেছেন। তাদের মুখের দিকে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশ, দেশের ছাত্রসমাজ তাকিয়ে থাকত কী কর্মসূচি আসছে? এখন একেক জন একেক দিকে চলে গেলেও তাদের যে ইতিহাস-রেকর্ড তা কখনোই ভাঙা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, দেশের যখন উত্তাল সময় তখন এই চার তরুণ নেতা নেতৃত্ব দিয়েছেন। যে কারণে তখন জাহানারা ইমামসহ ওই সময়ে যারা ছিলেন তারা এই চারজনকে চার খলিফা খেতাব দেন। কারণ এই চার খলিফাই ছিল আন্দোলনের অগ্রদূত।

জানা যায়, চার ছাত্রনেতার মধ্যে আবদুল কুদ্দুস মাখন ছিলেন ছাত্রনেতাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি সত্তরের দশকের শুরুতে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে মাখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যান্য নেতাসহ আবদুল কুদ্দুস মাখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্বরে ২ মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন এবং পরদিন তিনি তাঁর সহকর্মীসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘জাতির জনক’ বলে ঘোষণা দেন। আবদুল কুদ্দুস মাখন ১৯৭৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন (১৯৯২-১৯৯৪)। ১৯৯৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।

আরেক নেতা হলে শাহজাহান সিরাজ; যিনি আজ চলে গেলেন। জানা গেছে, ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্যদিয়ে শাহজাহান সিরাজ ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সেই সময় তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজের ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র-রাজনীতিতে উঠে আসেন। ১৯৬৪-৬৫ এবং ১৯৬৬-৬৭ দুই মেয়াদে তিনি করটিয়া সা’দাত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। এরপর তিনি ১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’র (যার অন্য নাম নিউক্লিয়াস) সক্রিয় কর্মী, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা।

১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব। সেখান থেকেই পরদিন স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের পরিকল্পনা করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে বিশাল এক ছাত্রসমাবেশে বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন শাহজাহান সিরাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স’ (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর শাহজাহান সিরাজ সর্বদলীয় সমাজতান্ত্রিক সরকার গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনে ভূমিকা পালন করেন, যা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিরোধী দল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী সাধারণ সম্পাদক হন শাহজাহান সিরাজ। পরে জাসদের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। জাসদের মনোনয়নে তিনবার তিনি জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

শাহজাহান সিরাজ ১৯৯৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি বিএনপির মনোনয়নেও একবার একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চারদলীয় জোট সরকারে বন ও পরিবেশমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হন শাহজাহান সিরাজ। তখন দুর্নীতির মামলায় তার সাজার রায়ও হয়েছিল।

আরেক খলিফা আ.স.ম আব্দুর রব বর্তমানে বাংলাদশের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর নেতা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত যে পতাকা সেই পতাকা সর্ব প্রথম উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন। ১৯৭১ ৩ মার্চ তিনি পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে ‘জাতির জনক’ উপাধি প্রদান করেন।

আ স ম আব্দুর রব ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ নির্বাচনের পর জাসদ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়। ফলশ্রুতিতে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন।এখন তার সমর্থিত (জে.এস.ডি) সরকারবিরোধী জোটে অবস্থান করছে।

১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাত সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেয়া হলে আ. স. ম. আবদুর রব যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনিও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য পাওয়ায় জাতীয়ভাবে খ্যাতি পান। স্বাধীনতার পর নানা মান অভিমান নিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। নূরে আলম সিদ্দিকী বর্তমানে রাজনীতির মূল স্রোতের বাইরে গিয়ে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

 

সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!