অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছে, তারা ওই ফ্যাসিস্ট সরকারকে নাকি পতন ঘটানোর। তারা কি পেরেছিল? ১৬ বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন ঈদের পরে, পূজার পরে আন্দোলনের চেষ্টা করেছিল এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের ঘটাতে, তারা কি পেরেছিল? আজ রোববার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ শহরস্থ সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মাঠে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা সারজিস আলমকে বলেন, আন্দোলনের দিন অস্ত্র নিয়ে যারা হামলা করেছিল তাদের অনেকে এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলা থেকে যোগসাজশে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের ব্যাপারে প্রশাসনও শক্ত অবস্থান নিচ্ছে না।
এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অনেকে ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে আন্দোলনের বিভিন্ন ভিডিও-ছবি সারজিসকে দেখান। সারজিস আলম সবার কথা লিখে নেন এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এর আগে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সফরের অংশ হিসেবে সকাল ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের সমন্বয়ক দল। সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়কদের সঙ্গে ও পরে নিহত-আহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করে সমন্বয়ক দল। এ সময় স্বজনরা আন্দোলনে নিহতদের শহীদি মর্যাদা প্রদানের দাবি তোলেন। সারজিস আলম নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। আহতদের চিকিৎসা বিষয়ে সহযোগিতার কথা জানান।
এরপর দুপুর ১টার দিকে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন সমন্বয়করা। এতে জেলার বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এতে জেলা জাতীয় পার্টির একাংশ, জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীরা অংশ নেন। আর ১৪ সদস্যের টিমে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইব্রাহীম নীরব, মম, সালেহীন আবেদিন অয়ন, মোবাশ্বের, জেদনি, রোহান, ইফতি, তালহা, মো. আনোয়ার হোসাইন, মো. হৃদয়সহ বাকিরা।
উল্লেখ, গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার কাজী মতিনের ছেলে রিয়াজুল ফরাজি, আলী আকবরের ছেলে মোহাম্মদ সজল ও সিরাজ সরদারের ছেলে নূর মোহাম্মদ ডিপজল। এছাড়া সেদিন অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অন্তত শতাধিক ছাত্র-জনতা।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস