অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার বেতাগী পৌরসভার সি টি সি আর আই পি প্রকল্পের একটি প্যাকেজে ৭-৮টি রাস্তার ১৮ কোটি টাকার কাজের পৌরসভার সাবেক মেয়র এবিএম গোলম কবির ও নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যোগসাজশে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেতাগী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এবং কুয়াকাটা সবুজ বাংলা রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী মো. মারুফ রেজা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রধান প্রকৗশলী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। ইতিমধ্যে এসব দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারী মো. মারুফ রেজা বলেন, ‘পৌরসভার সি টি সি আর আই পি প্রকল্পের এসব অনিয়মের বিবরণ উল্লেখ করে গত ২৮ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী, গত ২৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বরাবরে, গত ২৫ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং গত ২৫ আগস্ট পৌরসভা-১ এর উপ-সচিব বরাবরে ব্যবস্থার নেওয়া আবেদন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে বাসন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলাবিশষ্ট কাম সাইক্লোন শেল্টারের কাজ চলমান থাকায় ওই বিদ্যালয়ের কাজ দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে গত দুই সপ্তাহ ধরে কাজ স্থগিত রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরো জানা গেছে, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন কৌশল করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী খলিলুর রহমানকে ঠিকাদারি কাজের দায়িত্ব দেওয়া হত। আর খলিলুর রহমান এবং সাবেক পৌরসভার মেয়র এবিএম গোলাম কবিরের সাথে ব্যবসায়ীক অংশীদার। এসব কাজের অন্য যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব দেওয়া হত তাদের কাছ থেকে সাবেক পৌর মেয়র কবির ১৪ শতাংশ অগ্রিম কেটে নিত এবং বিল করানোর সময় ঠিকাদারদের কাছ থেকে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন বিভিন্ন অজুহাতে ১৪ শতাংশ কেটে নিত।পৌরসভার একাধিক কর্মচারী বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন এই পৌরসভায় গত ১২ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগের পোষ্যপুত্র হিসেবে কাজ করছেন। ঠিকাদার এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর অপকর্ম সবসময় সমর্থন দিতেন সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির। এভাবে লুটপাটের আকঁড়ায় পরিণত হয়েছে বেতাগী পৌরসভা। মেয়র কবিরের ঢাকায় দুটি বাড়ি এবং কেরানিগঞ্জে একশ শতকের বেশি জমি রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে শত কোটি টাকার বেশি নগদ অর্থ রয়েছে। গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর তিনি পলাতক রয়েছেন। একইভাবে পলাতক রয়েছে বেতাগীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, হোসনাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে সভাপতি এবং খান এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী খলিলুর রহমান খান।
বর্তমানে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি সাবেক পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর খানের সাথে। এ বিষয় বেতাগী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার কোনো দোষ না পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম যেভাবে নির্দেশ দিতেন সেভাবে দায়িত্ব পালন করা হতো। এ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।’