আলোচিত ১৯৯৬-এর শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আমীরুল ইসলাম চৌধুরীর তদন্ত প্রতিবেদনে বেক্সিমকো ফার্মা সম্পর্কে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৬৭ টাকা। একই বছরের ১৬ নভেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬৮ টাকায়। আর নভেম্বরের শেষে এসে বাজারে পতন শুরু হয়। তদন্ত কমিটির মতে, কম্পানিটির শেয়ার নিয়ে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। যার সঙ্গে কিছু ব্রোকারস, কম্পানিটির বড় অঙ্কের শেয়ারধারী এবং কম্পানির কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।
শাইনপুকুর হোল্ডিংস সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৭৩ টাকা। একই বছরের ২৮ নভেম্বর তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৭৫৪ টাকায় ওঠে। ’৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে কম্পানিটির প্রায় ৫২ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়। শাইনপুকুরের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিল বেক্সিমকো ইনভেস্টমেন্ট কম্পানি, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, সাতক্ষীরা ফিশারিজ, বাকখালী ফিশারিজ, মৃত্তিকা লিমিটেড এবং বেনামে বেক্সিমকো গ্রুপের কিছু কর্মকর্তা।
সাত বছর ধরে ঝুলছে আপিল
এদিকে সংশ্লিষ্ট একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাতিল হওয়া মামলা দুটি পুনরুজ্জীবিত করতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। সে জন্য ২০১৭ সালে আপিলও করে বাদী বিএসইসি। এই দুটি মামলাসহ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিসংক্রান্ত ১৭টি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসির আইন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর একটি অফিস আদেশ জারি করে মামলাগুলোর শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর দেওয়া নোটিশে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুরের মামলার হালনাগাদ তথ্যের সঙ্গে আইনজীবী এ এম মাছুমের নাম উল্লেখ করা আছে। বিষয়টি সম্পর্কে এই আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলা দুটি আমার কাছে ছিল। কিন্তু পরে ছেড়ে দিয়েছি। ফলে মামলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
আরো যত মামলা
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার চার মাসের মাথায় শেয়ারবাজারে ভয়াবহ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। সে সময় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
১৯৯৬ সালের পর শেয়ারবাজারে আরেক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে ২০১০ সালে। এ দুই কেলেঙ্কারির ঘটনায় মোট ১৭টি মামলা করা হয়। ১৯৯৬ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারের দাম হেরফের করার অভিযোগে ৩৮ ব্যক্তি, আটটি তালিকাভুক্ত কম্পানি এবং ছয়টি ব্রোকারেজ ফার্মের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা করে।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস