MENU

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ১৭ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
  • ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৩ই রবিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১২:৫৫
Search
Close this search box.
চাকরিপ্রার্থীদের জন্য যেসব সংস্কার জরুরি

চাকরিপ্রার্থীদের জন্য যেসব সংস্কার জরুরি

প্রকাশিতঃ
অনলাইন ডেস্ক : বেকার ও বেকারত্ব: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তির ২৩ লাখই বেকার। বিবিএস শ্রমশক্তি জরিপের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই, যারা গত ৩০ দিনে বেতন-মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছে। কিন্তু গত সাত দিনে কমপক্ষে এক ঘণ্টাও কোনো কাজ করেনি। চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই টিউশন ও পার্টটাইম কাজের সঙ্গে যুক্ত।  তাই বলা যায়, পরিসংখ্যানের হিসাবের চেয়েও প্রকৃত বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই আগামীর বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও টেকসই কর্মসংস্থানের রূপরেখা তৈরি ও সেটি নিশ্চিত করা জরুরি।

সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে সমতা: সরকারি চাকরিতে মোট পদ ১৯ লাখ, যা কর্মক্ষম শ্রমশক্তির ২.৫ শতাংশ এবং মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। অর্থাৎ চাইলেও অবশিষ্ট ৯৭.৫ শতাংশ শ্রমশক্তিকে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তাই কর্মক্ষম বেকারদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বেসরকারি চাকরি ও কর্মসংস্থানের অন্যান্য উৎসর (যেমন—উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সিং) উন্নয়ন, পৃষ্ঠপোষকতা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।  সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য কমিয়ে আনাটাও জরুরি। তাহলে চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘ সময় বেকার থেকে সরকারি চাকরির চেষ্টা না করে পড়াশোনা শেষ করেই একটি বেসরকারি চাকরিতে ঢুকে যাবেন। এর ফলে প্রার্থীরা যে তিন-চার বছর ধরে চাকরির প্রস্তুতি নেন, সেই শ্রমঘণ্টার সাশ্রয় হবে।

বেসরকারি খাতে চাকরির নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধি না করতে পারলে এ খাতের প্রতি তরুণদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে না। দুর্নীতি ও অবৈধ ক্ষমতা চর্চার মন্দ উদ্দেশ্যেও অনেকেই সরকারি চাকরির প্রতি বাড়তি আগ্রহী দেখাচ্ছেন। এটি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের খাত অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিকের পরপরই দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানো, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নতি প্রভৃতির মাধ্যমে উদ্যোক্তা উন্নয়নকেও সহজ করতে হবে।
শিক্ষিত-দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি: বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে কর্মরত বিদেশিদের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। অবৈধ বিদেশি শ্রমশক্তি বন্ধ করতে পারলে আরো ১০ লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ করা যাবে। পাশাপাশি দেশের বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে। বিদেশি কর্মীদের পদগুলোর শূন্যতা পূরণে প্রয়োজনীয় দক্ষ ও যোগ্য জনবল তৈরিও জরুরি। বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা এক থেকে দেড় কোটি হলেও সেখানে উচ্চপদস্থ চাকরিজীবীর সংখ্যা খুব কম। ভারত ও চীনের মতো শিক্ষিত-দক্ষ শ্রমশক্তিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে পাঠানোর চেষ্টা করতে হবে। তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানের নিচের পদগুলোতেও বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ভবিষ্যতে। এতে দেশে বেকারত্বের চাপ কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের হারও বাড়বে। শ্রমশক্তি রপ্তানির পাশাপাশি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করার পদক্ষেপও নিতে হবে।
নিয়মিত বিজ্ঞপ্তি ও শূন্যপদ পূরণ: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরির ১৯ লাখ পদের প্রায় পাঁচ লাখ পদই শূন্য। শূন্যপদগুলো পূরণ হলে একদিকে যেমন রাষ্ট্রীয় জনসেবার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে, তেমনি চাকরিপ্রার্থীদের একটি বড় অংশের কর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে।

প্রকল্প বা আউটসোর্সিং নিয়োগের বিকল্প: সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রকল্প বা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী মেয়াদে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে মেয়াদ শেষে বিভিন্নভাবে তাঁরা স্থায়ী হচ্ছেন। ফলে কর্মীদের আন্ত বিরোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও মেধাবী-যোগ্যদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সীমিত হচ্ছে। তাই অস্থায়ী নিয়োগ বন্ধ ও এর বিকল্প নিয়ে ভাবা উচিত। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের (থার্ড পার্টি) মাধ্যমে ভাড়া করা জনবল দিয়ে প্রকল্পের কাজ করা যেতে পারে।

চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি: বয়স ৩০ বছর পেরোলেই বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ বিশ্বের ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর। কোনো কোনো দেশে আবার এটি উন্মুক্ত। আমাদের দেশেও বয়সসীমা বাড়িয়ে বা এই বাধা তুলে দিলে কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেমন—একটি খাতে অনেক বছর চাকরি করার পর কেউ চাইলে অন্য খাতে চাকরি করতে পারবেন। এর ফলে সরকারি-বেসরকারি খাতের পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়েরও সুযোগ হবে। তাই চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘদিনের বয়স বৃদ্ধির প্রত্যাশা শুধু চাকরিপ্রার্থীদের জন্যই নয়, কর্মসংস্থান খাতের উন্নয়নের জন্যও জরুরি।

আবেদন ফি কমান: সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই নিয়োগ আবেদনে ফি নেওয়া হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান তুলনামূলক বেশি ফি নির্ধারণ করে। আবেদন ফি সহনীয় রাখতে হবে।

সমন্বিত বিজ্ঞপ্তি ও বিকেন্দ্রীকরণ: চাকরিপ্রার্থীদের সপ্তাহান্তে রাজধানীমুখী না করে বিভাগীয় শহরগুলোতে নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা করা যেতে পারে। ফলে একদিকে যেমন ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে রাষ্ট্রের বিকেন্দ্রীকরণের একটি পদক্ষেপও হবে। এ ক্ষেত্রে বারবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও একাধিক নিয়োগপ্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনার ঝামেলা এড়াতে সরকারি চাকরিতে গ্রেডভিত্তিক সমন্বিত সার্কুলার (নবম গ্রেড, দশম গ্রেড, ১১-১৩তম গ্রেড, ১৪-১৭তম গ্রেড, ১৮-২০তম গ্রেড) নিয়োগকারী ও চাকরিপ্রার্থী উভয়ের জন্যই সুবিধাজনক হবে।

পিএসসির সংস্কার: প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উন্নয়নে গঠনমূলক সংস্কার করা উচিত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)। বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে ‘কাট নাম্বার’ উল্লেখ, লিখিত পরীক্ষায় খাতা নিরীক্ষণের সুযোগ, মৌখিক পরীক্ষা ৫০ নম্বরের মধ্যে সীমাবদ্ধ, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (ক্যাডারে সুপারিশ না হওয়া) সব প্রার্থীকে নন-ক্যাডার চাকরিতে সুপারিশ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের দুর্নীতি রোধ এবং সব সরকারি নিয়োগ পরীক্ষা পিএসসির অধীনে নেওয়া যেতে পারে। এর পাশাপাশি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনে বুদ্ধিবৃত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতির ওপর জোর, চাকরির ভেরিফিকেশনে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এর ফলে কর্মসংস্থান ও রাষ্ট্রের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত সম্ভব হবে।

 

সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!