অনলাইন ডেস্ক : ‘যাই হোক না কেন’ অন্তবর্তী সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না জানিয়ে তিনি বলেছেন, আগামী দেড় বছরের মধ্যে দেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এসব কথা বলেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থাটি। ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. ইউনূস ১৭ কোটি মানুষের দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করতে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহেই বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো। আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসাথে কাজ করি তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোন কারণ নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেনাবাহিনীর ভেতরে অন্যায়ের সঙ্গে জড়ানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি সেনাপ্রধান। সেনাবাহিনীতে কর্মরত কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থাগুলোতে কাজ করার সময় কিছু সামরিক কর্মকর্তা বিচ্যুতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকতে পারেন।
দীর্ঘ মেয়াদে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে রাখার ইচ্ছার কথাও জানান সেনাপ্রধান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকবে। সেক্ষাত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে।’
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান। অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে এ দিকটায় নজর দিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। কোনো অবস্থাতেই একজন সৈনিকের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া উচিত নয়।’
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস