অনলাইন ডেস্ক : গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভার একটি মহল্লা রাইগ্রাম। পৌরসভা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গ্রামটির অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে মাদকের নানামুখী কারবারে এই গ্রাম এখন ‘হেরোইনপল্লি’ হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছে। একজনের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ কারবারে জড়িয়ে পড়েছে কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ এলাকার অনেক নারী-পুরুষ। আগে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে চলত কারবার। তবে সরকার পরিবর্তনেও তা বন্ধ হয়নি, উল্টো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জড়িতরা। এতে সামাজিক অবক্ষয়ের পাশাপাশি এলাকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এমনকি গ্রামের নাম শুনলে আশপাশের এলাকার কেউ ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে চান না বলেও দাবি তাদের।
স্থানীয়দের ভাষ্য, মাদক কারবারিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা এতদিন মুখ খুলতে পারেননি। এখন সময় ও ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। এই সুযোগে মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করার দাবি তাদের। গ্রামটির কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪০ বছর আগে আবদুল জব্বারের হাত ধরে গ্রামে মাদক কারবার শুরু হয়। এই গ্রাম ফেনসিডিল, গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকের সঙ্গে হেরোইন কারবারের অন্যতম ‘নির্ভরযোগ্য স্থান’ হয়ে ওঠে। সে থেকেই গ্রামটি উত্তরাঞ্চলজুড়ে ‘হেরোইনপল্লি’ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করে। আবদুল জব্বারের মৃত্যুর পর বর্তমানে এই ব্যবসার হাল ধরেছে তার পরিবারের অন্য সদস্যরা। তাদের প্ররোচনায় গোটা এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এতে জড়িয়ে পড়েছে কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমি বহুবার ওই গ্রামের মাদক কারবারিদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার করেছি। দ্রুতই ওই এলাকাসহ প্রতিটি মাদক স্পটে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন সমকালকে বলেন, ওই গ্রামে সভা-সেমিনার করে মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। শিগগির গ্রামটি মাদকমুক্ত করা সম্ভব হবে।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস