অনলাইন ডেস্ক : ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশলী বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার ফাহাদ স্মরণে আগামীকাল সোমবার দুপুরে শাহবাগে সংহতি সমাবেশ করবে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির মুখপাত্র রায়হান উদ্দীন এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান। সংহতি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে দৈনিক ‘আমার দেশে’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি আশাবাদ করেন।
রায়হান উদ্দীন বলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থার ফ্যাসিবাদী আচরণের অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছিল স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের কাছে। যেখানে ছাত্ররাজনীতির নামে প্রতিপক্ষকে হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন ছিল নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) তার ব্যতিক্রম ছিল না। ছাত্রলীগের অপরাজনীতির বলি হতে হয় বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে, যা ছিল ছাত্রলীগের বিগত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নের একটি উদাহরণ মাত্র।
বিগত ৫ আগস্ট দেশের আপামর ছাত্রজনতা ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। যার কারণে দেশে অভূতপূর্ব একটি ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের সূচনা হয় এবং স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের নিপীড়নের অন্যতম উদাহরণ ছিল শহীদ আবরার ফাহাদ। শহীদ আবরার ফাহাদ ছিলেন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি জাগ্রত কণ্ঠস্বর। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে তাকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে রাতভর অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে শহীদ করা হয়। একটি স্বাধীন দেশে ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোতে শিক্ষাঙ্গন, কর্মস্থল ও অন্যান্য পরিসরে যেসব নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং এসব ঘটনার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতা সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ দাবি করছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ সংগঠনের বুয়েট প্রতিনিধি আব্দুর নূর তুষার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জাকারিয়া।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস