কমলার দাম দাঁড়ায় ১৫১ টাকা। আঙুরের ১৮৮ টাকা। আর খেজুরের প্রতি কেজিতে দাম পড়ে ২৯০ টাকা। আমদানি করা ফলের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা লাভ করেন কয়েক গুণ। যদিও তাঁরা বেশি দামের কারণ হিসেবে ডলারের লাগামহীন দর ও উচ্চ শুল্কহারকেই দায়ী করেন। বাস্তবতা হলো আপেল, কমলা, আঙুর কিংবা খেজুরের দাম বাড়ার পেছনে দায়ী অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। তাদের কারসাজিতে দেশবাসীর পক্ষে ফল খাওয়া অসম্ভব হয়ে গেছে। অন্যদিকে এক বছরের ব্যবধানে ফলের আমদানি কমেছে ২৮ হাজার মেট্রিক টন। বিদায়ি অর্থবছরেও আপেল, কমলা ও খেজুরের আমদানি কমেছে। আমদানি সামান্য বেড়েছে আঙুরের।
এনবিআরের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আপল আমদানি হয়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৫ মেট্রিক টন। আগের অর্থবছরে ছিল এক লাখ ৮২ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। কমলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার ৪৭০ মেট্রিক টন। আগের অর্থবছরে ছিল দুই লাখ ২০ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন। খেজুর আমদানি হয়েছে ৭৭ হাজার ৬১১ মেট্রিক টন। এর আগের অর্থবছরে এর আমদানি ছিল ৮৩ হাজার ৭০১ মেট্রিক টন। আঙুর আমদানি হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন। এর আগের বছর এর আমদানি ছিল ৯৭ হাজার ৭৮৬ মেট্রিক টন। ফল খেতে না পারার কারণে দেশবাসী পর্যাপ্ত পুষ্টি, ভিটামিন ও মিনারেল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা মনির বলেন, ‘আমার বাসায় বৃদ্ধ মা-বাবা ও ছোট শিশু আছে। ইচ্ছা থাকলেও দাম শুনে কেনার সাহস করি না।’
গবেষণাটি বলছে, ফল কম খাওয়ার কারণে বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সুস্থভাবে বাঁচার জন্য এবং মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, ফলের মধ্যে খাদ্যশক্তি থাকে, যা শরীরের ভেতর থেকে ক্ষতিকর চর্বি বের করে দেয়, তাই ফল সবার জন্য উপকারী। পুষ্টিমানের পাশাপাশি সব ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও খনিজ পদার্থ থাকে।
এদিকে ফলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল জলিল। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রতিদিন আমাদের পাঁচ-ছয়টি টিম কাজ করে। ফলের বাজারে আমরা অভিযান চালাব।’
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস