MENU

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
  • ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১২ই রবিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, দুপুর ২:৪৭
Search
Close this search box.
পঞ্চবাহনের পাঁচ কথা

পঞ্চবাহনের পাঁচ কথা

প্রকাশিতঃ

অনলাইন ডেস্ক : দেবীবাহিনীর প্রধান আকর্ষণ দুর্গা ও তাঁর সন্তানেরা। কিন্তু তাঁদের বাহনেরা কি আকর্ষণীয়? প্রত্যেকের পাশে এমন সব প্রাণী, তাদের চরিত্র দিয়ে যেন জোড় মেলানো যায় না। কিন্তু দুর্গাপূজার লোককাহিনিতে প্রত্যেকের বাহন নিয়েই বিভিন্ন কার্যকারণ হাজির করা হয়েছে।

মহিষাসুর পূজা

মহিষাসুর স্বর্গরাজ্য অধিকার করে নিয়েছিল। অশুভ শক্তি। দেবদ্রোহী। দেবী মহিষাসুরকে ত্রিশূল দিয়ে বধ করেন। তবু প্রচলিত নিয়মে দেবী দুর্গার সঙ্গে মহিষাসুরকে পূজা করার নিয়ম আছে। সেটা নিয়েও একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। কালিকা পুরাণে আছে, মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে নিজের মৃত্যুদৃশ্য স্বপ্নে দেখে ভীত হন মহিষাসুর। পরে তিনি ভদ্রকালীকে খুশি করেছিলেন। ভদ্রকালী তাঁকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেননি। বদলে একটি বর দিলেন। মহিষাসুর দেবতাদের যজ্ঞভাগ বর চাইলে দেবী সেই বর দিতে অস্বীকৃত হন। মহিষাসুরকে তিনি বর দেন, যেখানেই দেবী পূজিতা হবেন, সেখানেই তাঁর চরণতলে মহিষাসুরেরও স্থান হবে। তাই দুর্গাপূজার একই মণ্ডপে মহিষাসুরের পূজার চল।

পেচক-কাহিনি

ধন আর ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা। প্যাঁচা দিনের বেলা চোখে দেখতে পায় না। লোককথা মতে, মনে করা হয় যারা তত্ত্ব বিষয়ে অজ্ঞ, যারা ধনবান, তারা পেচকধর্মী। আপাত দৃষ্টিতে অন্ধ। ধনবান ব্যক্তির মধ্যে এই প্যাঁচার বৃত্তিটি বর্তমান থাকে। তাই ভাবার্থগত কারণেই বাঙালি লোক বিশ্বাসে প্যাঁচাকে লক্ষ্মীর বাহন হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে।

এই যেমন দেবী দুর্গার বাহন সিংহ। পূজায় দুর্গার সঙ্গে সিংহেরও পূজা করা হয়। সিংহ রজোগুণের শক্তির উচ্ছ্বাসের প্রতীক। সিংহ আসুরিকতা ও পাশবিকতা দূর করে দেবীর পুণ্য কাজের সাহাঘ্যকারী হয়ে উঠেছে। সিংহকে মানুষের পাশবিকতা বিজয়ের প্রতীকও ধরা হয়। মানুষ মানবতা আর সত্যিকারের মনুষ্যত্বের অধিকারী হয়। সিংহ দেবীর চরণতলে সেই ভাবনারই প্রতীক। লোককথায় আছে, মহিষাসুর বধের সময় হিমালয় সিংহকে বাহন হিসেবে দিয়েছিল।

ত্রিশূল হাতে দুগর্তিনাশিনী

পূজার সময় বাহনগুলো একবার করে দেখে নেওয়ার পরই চোখে পড়ে দুর্গার এক হাতের মস্ত ত্রিশূল। অন্য নয়টি হাতে নানা রকম অস্ত্র যেন ত্রিশূলের কাছে ম্লান। মহিষাসুরমর্দিনীর আকার ত্রিশূল ছাড়া যেন কল্পনাই করা যায় না। শাস্ত্রীয় মতে, ত্রিশূল আকৃতিতে ত্রিকোণবিশিষ্ট। এটি মহাশক্তি। স্বত্ত্ব, তমঃ ও রজঃ—এই তিন গুণ ত্রিশূলের মধ্যে বিদ্যমান। দেবী ত্রিশূল দিয়ে মহিষাসুরের রজঃ ও তমোগুণের বিনাশ করেছিলেন।

কার্তিকের প্রিয় বাহন

দেবীর আরেক ছেলে কার্তিকের বাহন ময়ূর। কিন্তু এটাও কি মেলানো যায়? কার্তিক দেব সেনাপতি। সৌন্দর্য আর বীর্যের প্রতীক। আর তাকে বহন করে কিনা একটি ময়ূর! লোককাহিনি বলে ভিন্ন কথা। ময়ূর বিশাল বিষধর সাপকে কৌশলে নিহত করে। এটা তার যুদ্ধনৈপুণ্যের পরিচয় দেয়। ময়ূর দলবদ্ধভাবে বাস করে। ময়ূর স্ত্রীদের রক্ষায় সদা সচেষ্ট। ময়ূরের এই বৈশিষ্ট্য গুণের জন্যই কার্তিকের প্রিয় বাহন ময়ূর। কার্তিক একজন বীর যোদ্ধা। তিনি যুদ্ধে সিদ্ধহস্ত। অসহায় নারীদের প্রতি মানবিক মনোভাবসম্পন্ন।

হাঁস বিদ্যাদেবীর বাহন

সরস্বতী বাণী আর জ্ঞানের দেবী। আর তাঁর বাহন হাঁস। হাঁস হিন্দুদের নিকট একটি পবিত্র প্রতীক। শাস্ত্রীয় মতে, দেবী এই উভচর বাহন ব্রহ্মার শক্তি হিসেবে তাঁর কাছ থেকে পেয়েছিলেন। কিন্তু ব্রহ্মা বা সরস্বতী দেবীর বাহনটি পাখিবিশেষ নয়। বেদ ও উপনিষদে হংস শব্দের অর্থ সূর্য। সূর্যের সৃজনী শক্তির বিগ্রহান্বিত রূপ ব্রহ্মা এবং সূর্যাগ্নির গতিশীল কিরণরূপা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শিবশক্তি সরস্বতী দেবীর বাহন হয়েছে হংস বা সূর্য।

কলাবউয়ের কথকতা

দুর্গামণ্ডপে দুর্গার ডানে কলাগাছের প্রতিকৃতিটির প্রচলিত নাম কলাবউ। শৈশবে আমরা ভাবতাম, সে বুঝি গণেশের বউ। কিন্তু গণেশের তো আদতে বিয়েই হয়নি। কলাবউয়ের শাস্ত্রীয় নাম নবপত্রিকা। মহাষষ্ঠীতে বোধনের সময় কলাবউ বা নবপত্রিকাকে স্নান করানো হয়।

নবপত্রিকা অর্থ নয়টি গাছের পাতা। কিন্তু প্রচলিত নিয়মে নয়টি উদ্ভিদ। কলা (রম্ভা), হলুদ (হরিদ্রা), জয়ন্তী, বেল (বিল্ব), ডালিম (দাড়িম্ব), অশোক, মান ও ধান। একটি কলাগাছে অন্য আটটি গাছের চারা একসঙ্গে করে একজোড়া বেলসহ অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপেড়ে সাদা শাড়ি পরিয়ে ঘোমটা দেওয়া বউয়ের আকার দেওয়া হয়।

এই নয়টি উদ্ভিদকে দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা হয়। নয়টি উদ্ভিদের প্রতিটির গুরুত্ব আছে। প্রতিটি উদ্ভিদই দুর্গার এক একটি রূপ এবং তাঁর কারিকাশক্তির অর্থ বহন করে। এরা সমষ্টিগতভাবে দুর্গা বা মহাশক্তির প্রতিনিধি। মনে করা হয়, নয়টি প্রাকৃতিক সবুজ শক্তির সঙ্গে আধ্যাত্মিক চেতনশক্তির মিলন হয় দেবীবন্দনায়। সারা বছর যাতে দেশবাসীর রোগযন্ত্রণা কম থাকে এবং দেশ যেন সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা হয়ে ওঠে সেই বাসনায় এই নবপত্রিকাকে দুর্গারূপে পুজো করা হয়।

বাহন হিসেবে ইঁদুর

দুর্গার এক ছেলে গণেশ। বিঘ্ন নাশকারী। অষ্টপাশ নাশকারী। অষ্টপাশ হচ্ছে ঘৃণা, অপমান, লজ্জা, মান, মোহ, দম্ভ, দ্বেষ ও বৈগুণ্য। গণেশের মধ্যে এই অষ্টপাশ ছেদ করার ভাব বর্তমান। গণেশ গণশক্তির ঐক্যবদ্ধতারও প্রতীক।গণেশের বাহন ইঁদুর বা মুষিক। ইঁদুর মায়া ও অষ্টপাশ ছেদনের প্রতীক। প্রশ্ন জাগতে পারে, ওইটুকু একটা প্রাণী এত বিশাল শরীরের একজনকে কী করে বহন করে! মূলত এখানে ইঁদুরের চরিত্রবৈশিষ্ট্য মুখ্য। এই ছোট্ট প্রাণী একটু একটু করে আস্ত পর্বতও কাটতে পারে। এটি মূলত ধৈর্য, অধ্যবসায়, উদ্যমের প্রতীক। তাই গণেশের বাহন ইঁদুর।

শিব, চক্র আর শঙ্খ

দুর্গাপূজায় আমরা মণ্ডপে দুর্গার পেছনেই শিবের ছবি দেখতে পাই। শাস্ত্রীয় মতে, শিব বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পরম কেন্দ্র। বিশ্বলীলার মধ্যভাগে তিনি আছেন। নিয়ন্ত্রক শক্তি হিসেবে। তাই শিবকে দুর্গার সঙ্গে দেখা যায়। দুর্গার হাতে একটি সাপ দেখা যায়। শাস্ত্রমতে, সাপ হলো পাশ। দেবী সাপ দিয়ে অসুরকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। লৌকিকতা মতে, তিনি শক্তিরূপিণী। তিনি এভাবেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে ধরে রেখেছেন।

চক্র তিন কালের প্রতীক

আর শঙ্খ। শঙ্খের ধ্বনি ওঁ। শাস্ত্রমতে, ওঁ ধ্বনির মাধ্যমেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সূচনা হয়েছিল। এই শব্দই সব। আরতি, কুমারী পূজা, সিঁদুর খেলাসহ আরও নানা লৌকিকতা নিয়েই দুর্গাপূজা। এ রকম নানা অনুষঙ্গ নিয়েই দুর্গেশনন্দিনীর বন্দনা। আর বাঙালি মনে উৎসব আয়োজনের ঘটা।

 

সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Facebook
WhatsApp
Twitter

এ সম্পর্কিত আরো খবর

সম্পাদকঃ

সুভাষ সাহা

যুগ্ন সম্পাদকঃ

কাজী কবির হোসেন

ঠিকানাঃ

নারায়ণগঞ্জ অফিসঃ
পদ্মা সিটি প্লাজা, কক্ষ নংঃ ২২২, ৫৫/বি
এস, এম মালেহ রোড, টানবাজার
নারায়ণগঞ্জ-১৪০০

যোগাযোগ

ফোনঃ ৭৬৪০৬৯৯
মোবাইলঃ ০১৭১১৫৬১৩৯০
ইমেইলঃ bisherbashi.com.bd@gmail.com

USA OFFICE:

Wasington DC Bureau Chief:
Dastagir Jahangir,
3621 Columbia Pike Suit #104
Arlington USA, VA
22204
Phone: 7036770679
Email: tugrilcz@gmail.com

 

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!