অনলাইন ডেস্ক : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজের প্রধান প্রবেশপথের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ও ভড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, গত ২৭ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হাই সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম মহম্মদকে সভাপতি করা হয়। তিনি উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গোবড়া চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা। মহম্মদকে সভাপতি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম। তিনি বাঁশগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। সভাপতি পদ নিয়ে উভয়পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই মধ্যে আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম মহম্মদ কয়েকশত নেতা-কর্মী নিয়ে বাঁশগ্রাম কলেজে প্রবেশ করতে গেলে নুরুল হকের সমর্থকরা প্রথমে বাধা দেন। এসময় তাঁদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে যুবদলের নেতা আনোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হলে সহকর্মীরা উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
দুপুরে সরেজমিন কলেজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কলেজ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। কলেজের সামনে ও শালঘরমধুয়া বাজার সড়কের ইট-পাটকেল পড়ে আছে। সেখানে নুরুল হকের সমর্থকরা অবস্থান করেছিলেন। একজনের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। তবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানদার বলেন, নতুন সভাপতি কয়েক শত লোকজন নিয়ে কলেজে ঢুকতে গেলে বিএনপির দ ‘পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। থমথমে পরিবেশ। ভাঙচুর ও লুটপাটের ভয়ে দোকান বন্ধ করে চলে গেছেন ব্যবসায়ী।

বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. জাহিদুজ্জামান বলেন, ২৭ অক্টোবর গোলাম মহম্মদকে সভাপতি করে চিঠি দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর থেকে সভাপতির প্রতিপক্ষরা নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আজ সভাপতি কলেজে ঢোকার চেষ্টা করলে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। আহত যুবদল নেতার ভাই আতিয়ার হোসেন বলেন, গোলাম মহম্মদ ও তার লোকজন আমার ভাইকে মেরে জখম করেছে।

জানতে চাইলে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দাকে কলেজের সভাপতি করায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। আজ নেতা-কর্মীরা, কিভাবে সভাপতি বানানো হলো তা জানতে কলেজে ঢুকতে গেলে প্রতিপক্ষ হামলা করেছে। এতে যুবদল নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম মহম্মদ বলেন, কলেজে ঢুকতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে। ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কে কাকে মেরেছে তা আমি জানি না। বাঁশগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক ইকরামুল হক বলেন, কলেজ সভাপতির পদ নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন আহত হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সংবাদদাতা / ইলিয়াস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!