২০১৮ সালে সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় মাদক কারবারি ও গডফাদার হিসেবে দুই নম্বরে নাম ছিল জাফর আহমদের। সেই তালিকায় এক নম্বর নামটি ছিল কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক আলোচিত-সমালোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির। অথচ টানা ছয় বছর অধরাই ছিলেন এই জাফর আহমদ।
র্যাব ও স্থানীয়দের মতে, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য থাকাকালে আবদুর রহমান বদি নিজের নির্বাচনী এলাকা টেকনাফকে পরিণত করেছিলেন মাদক, চোরাচালান, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার স্বর্গরাজ্যে। আর সেই স্বর্গরাজ্য কার্যক্রমের ‘বিশ্বস্ত সহচর’ ছিলেন জাফর আহমদ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক হাজার ২৭৫ জন মাদক কারবারিকে তালিকাভুক্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেই প্রতিবেদনে আবদুর রহমান বদি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর জাফর আহমদকে ইয়াবা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অন্যতম মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
হাসিনা সরকারের পতন হলে ১৯ আগস্ট দুই মাসের মাথায় উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়। সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় ২০১৯ সালের দিকে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি ও জাফর আহমদকে ঢাকায় র্যাব সদর দপ্তরে ডেকে এনে ইয়াবা কারবারের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। এরপর এলাকায় ফিরে বদি ও জাফর ইয়াবাবিরোধী বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট রাতে টেকনাফে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জাফর আহমদ এবং তাঁর তিন ছেলের নেতৃত্বে টেকনাফের আলো শপিং কমপ্লেক্স, হোটেল নাফ কুইন ও আব্দুল্লাহ ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এসব ঘটনায় পৃথকভাবে তিনটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, যার সব কটিতেই জাফর আহমদকে আসামি করা হয়েছে। সূত্র জানায়, জাফর আহমদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, দুদকের মামলাসহ অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে। কয়েকটি মামলায় তিনি জামিনে থাকলেও বেশির ভাগ মামলাই বিচারাধীন।
সংবাদদাতা / ইলিয়াস