অনলাইন ডেস্ক : কয়েকদিন ধরে ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের দুর্নীতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে হারে সমালোচনা হচ্ছে সেই পরিমাণ সমালোচনা কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে যখন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয় তখনো হয়নি। মানে, যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই ড. মোমেনকে চাকরিচ্যুত করেছে তারা এবং মিডিয়াও কিন্তু এমন উঠেপড়ে লাগেনি।
আজকে ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তিনিও একজন শক্তিমান লেখক। তিনি খুব আফসোস করে বললেন, ‘দেখো মোমেনের মতো সৎ, মেধাবী অফিসারকে নিয়ে কী আজেবাজে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে, ও যে জীবনযাপন করেছে তা আমরা কোনোদিনও পারতাম না। ওর মতো গরিবানা জীবন তুমিও যাপন করতে পারতে না।’
এই আবদুল মোমেন হচ্ছেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী। যার ‘প্রতিমন্ত্রী’ এবং ‘ভারপ্রাপ্ত সচিব’ নামে গুরুত্বপূর্ণ দুটো উপন্যাস আছে। তার যেকোনো লেখা পড়ে সময় নষ্ট হয়েছে বা ভালো লাগেনি বলবে—এমন পাঠক পাওয়া যাবে না। আন্দালিব রাশদী তার লেখক নাম হলেও তিনি আরও কয়েকটি নামে লিখতেন। কেন লিখতেন? সম্মানীর জন্য।
দুই হাতে লিখতেন। যে বিষয়ে মোমেন ভাইয়ের কাছে লেখা চাইতাম সে বিষয়েই তিনি লিখতে পারতেন। শুধু পারতেনই না, বরং ওই বিষয়ে অন্য যে কারও চেয়ে ভালো লিখতেন। মোমেন ভাইয়ের লেখা ছাপার ক্ষেত্রে এক ধরনের অদৃশ্য নিষেধাজ্ঞার মতো নিরুৎসাহ থাকতো, তা কেন, তখন বুঝতাম। কিছু করার ছিল না। নানা কৌশলে ছাপতে হতো। তবে তার অপরিচিত নামগুলোর জন্য তিনি লিখে উপার্জন করার পথটা খোলা রাখতে পেরেছিলেন।
লেখালেখি যে তার আয় রোজগারের প্রধান উৎস এটা প্রথমে বুঝতে পারিনি। লেখার সম্মানী চাইলে প্রথম প্রথম মনে করতাম—লিখে টাকা পাওয়ার আনন্দের জন্যই হয়তো বিল চাইছেন। কিন্তু না, টাকাটা তার খুব দরকার ছিল। তিনি যুগান্তরে আসলে সম্পাদকের কাছে নিয়ে যেতে চাইতাম। বলতেন, তোমার সাথে আমার কাজ, তোমার পাতায় লিখি, তুমিই আমার সম্পাদক।
আমার সঙ্গে মাঝে মধ্যে যুগান্তরের ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার খেতেন। তিনি বড় ভাই দাবি করে জোর করে বিল দিতেন। তার একটা সঠিক ধারণা ছিল যে, তিনি গরিব হলেও আমার চেয়ে কিছুটা কম গরিব। তো, একদিন জোর করে আমি বিল দিয়েছিলাম। এরপর থেকে দুপুরের খাবারের কথা বললে বলতেন, তুমি বিল দিলে খাবো না। এবং খেতেনই না।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস