অনলাইন ডেস্ক : যৌতুকের টাকা না পেয়ে দুই সন্তানের জননী বিবি আয়েশা আক্তার শ্রাবনী (২৪) কে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে নিহতের স্বামী ইমান হোসেন (২৮) সহ শ^শুর বাড়ীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে কুমিল্লার সদর দক্ষিন মডেল থানার ভাটপাড়া ধনপুর এলাকার সুমন মিয়ার বসত ঘরের ভিতর দুই সন্তানের জননী ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে এসআই আকবর হোসেন পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশ পাঠায় পুলিশ।
নিহতের পরিবারের দাবি, যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের পিতা কুমিল্লার সদর দক্ষিন মডেল থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২/৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।অভিযুক্ত আসামিরা হলো- নিহতের স্বামী ইমান হোসেন (২৮), শাশুড়ি সুফিয়া বেগম (৫৫), ননাশ শাহিনুর আক্তার (৩০), জা রুমি আক্তার (২৮), ভাসুর মনির হোসেন (৩৫) ও শ^শুর বাড়ির স্বজন মোহাম্মদ আলী (২৫)। নিহত বিবি আয়েশা আক্তার শ্রাবনী কুমিল্লার নোয়াখালী সদর সুধারাম থানার (শাহ খলিফার বাড়ি/আল ফালাহ মসজিদের পাশে) নুর আলম এর মেয়ে।
অভিযুক্ত স্বামী ইমান হোসেন (২৮) কুমিল্লার সদর দক্ষিন মডেল থানাধীন ভাটপাড়া ধনপুর এলাকার শাহ আলম এর ছেলে। তাদের সোহান (৬ বছর) ও সাফয়ান (১১ মাস) নামে দুইটি শিশু সন্তান রয়েছে। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, আমার মেয়ে আয়েশা আক্তারকে বিগত ৭ বছর পূর্বে বর্ণিত ইমান হোসেনের সাথে তিন লাখ টাকা কাবিন রেজিঃ মূলে ইসলামী শরীয়তের ভিত্তিতে বিবাহ দেই।
বিবাহের সময় বিবাদীদের চাপে আমার মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে ৬০ হাজার টাকা নগদ ও বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র প্রদান করি।আমার মেয়ের দাম্পত্য জীবনে ২ ছেলে রয়েছে। আমার মেয়ে ইমান হোসেনের সাথে ঘর সংসার করাকালীন সময়ে ২ থেকে ৬নং বিবাদীরা বিগত তিন মাস পূর্ব থেকে আমার মেয়ের নিকট ১নং বিবাদীর জন্য ব্যবসা করার জন্য টাকা চায়।
ইতিপূর্বে টাকার জন্য অনেকবার মারধর করেছে এবং চিকিৎসা না করে আটকিয়ে রাখে। আমার মেয়ে আমাকে বিষয়টি জানালে আমি বিবাদীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিবাদীরা আমার সামনেই আমার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে অপবাদ দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও অপমান করে। আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় আমি কয়েকবার তাদের বাড়িতে গিয়ে এই বিষয়ে মীমাংসা করার চেষ্টা করিলেও তারা টাকা ছাড়া আমার মেয়েকে দিবেনা বলে জানায়।
গত ১০ ডিসেম্বব বিকাল ৫ ঘটিকার সময় আমার মেয়ের শ্বশুর শাহ আলম তার মোবাইল থেকে আমার মোবাইল ফোন করে বলে আমার মেয়ে মারা গেছে। এমন সংবাদ শুনে আমি আমার আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে দ্রুত নোয়াখালী থেকে কুমিল্লা সদর দক্ষিন থানাধীন ধনপুর তাদের বাড়িতে গিয়ে আমার মেয়ের লাশ দেখি।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেয়ে জামাই ইমান হোসেনসহ অপরাপর বিবাদীরা ব্যবসার টাকার জন্য আমার মেয়েকে মারধর করেছে। এতে তার মৃত্যু হয়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।এছাড়াও নিহতের স্বজনরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!