গ্রীষ্মকাল অনেক ক্ষেত্রেই ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত হয়ে দাঁড়ায়। এমন কিছু মনোমুগ্ধকর জায়গা আছে, যেখানে গরমকালে স্বল্প খরচে ভ্রমণ করা যায়। ভ্রমণের ষোলোকলা পূর্ণ করতে রোদ-বৃষ্টির এই সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নির্বাচন করতে হবে সেই জায়গাগুলো। চলমান উষ্ণতায় চলুন খুঁজে নেওয়া যাক বাংলাদেশের দারুণ কিছু ঘোরার জায়গা।

সিলেটের পাংথুমাই

সিলেটের জাফলং ইউনিয়নের সীমানায় পাংথুমাই গ্রাম। গ্রামটি গাছের সবুজ, মেঘের ধূসর এবং জলপ্রপাতের চঞ্চলতার মেলবন্ধনে যেন এক অপরূপ নিসর্গ। খুব জোরে বাতাস বয়ে গেলে অপার্থিব গোঙানি গ্রামের শেষে গুহার উপস্থিতির জানান দিয়ে যায়।

ঢাকা থেকে সিলেটগামী ট্রেনের ৩২০ টাকার শোভন চেয়ার বুকিং করা যেতে পারে। অতঃপর সিলেট শহর থেকে মাইক্রোবাস রিজার্ভ নিয়ে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে পৌঁছা যাবে পাংথুমাইয়ে।

ভোলার মনপুরা

শহরের কোলাহল ও দাবদাহ থেকে এক নিমিষেই মুক্তি দিতে পারে মনপুরা। ভোলা জেলার নদী ও সাগরের মিলনস্থলে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা। এখানকার পিনপতন নীরবতায় এক সূর্যাস্ত অথবা তারা ভরা রাতের সামিয়ানা এক জীবন্ত রূপকথার আমেজ দেবে। ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার লঞ্চে যেতে হবে। লঞ্চ ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৩৫০ টাকা।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল

পাহাড় আর চা বাগান ঘেরা শ্রীমঙ্গল সবসময়ই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক আদর্শ স্থান। ৪০টি চা বাগানের এই উপজেলা কিছু হাইল-হাওর ছাড়া পুরোটাই চা বাগানের দখলে। মাইলের পর মাইল চা বাগান ছাড়াও এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে নির্মাই শিববাড়ী ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলগামী ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া পড়বে ৩২০ টাকা।

নেত্রকোনার বিরিশিরি

চীনামাটির পাহাড় ঘেরা অপরূপ নীল হ্রদ দেখতে হলে যেতে হবে এই ঐতিহ্যবাহী গ্রামটিতে। হ্রদের নীল পানির ধারা শুরু হয়েছে সোমেশ্বরী নদী থেকে। আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে রানীখং গির্জা, কমলা রানীর দীঘি, পাহাড়ি কালচারাল একাডেমি, হাজংদের কিছু স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেন্ট যোসেফের গির্জা। ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ২৫০-৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সুখনগরীর বাস। সুখনগরীতে নেমে নদী পার হতে হবে নৌকায়। তারপর আবার বাসে ২০ টাকা ভাড়ায় দুর্গাপুর।

নারায়ণগঞ্জের পানাম নগর

ঢাকার কাছেই এই ঐতিহাসিক জায়গাটি ঢাকার ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সেরা দর্শনীয় স্থান। ৪০০ বছরের পুরোনো টাকশাল বাড়ি ও নীলকুঠি দেখার সময় মনে হবে সময়টা ঘুরে অতীতে চলে গেছে। এ ছাড়াও আছে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদি মসজিদ, পান্থশালা, খাজাঞ্চিখানা, চিত্রশালা, দরবার কক্ষ ও গুপ্তপথ। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে উঠে নারায়ণগঞ্জের পথে নেমে যেতে হবে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা। ভাড়া পড়তে পারে ৪০-৫০ টাকা। সেখান থেকে অটোতে ২০-৪০ টাকায় পৌঁছে যাওয়া যাবে পানাম নগরীতে।

রাঙামাটির কাপ্তাই লেক

আয়তনে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ এই কৃত্রিম হ্রদ যেন স্বর্গের প্রতিচ্ছবি। এখানে কোনো রকম ক্লান্তি ছাড়াই উপভোগ করা যাবে পাহাড়, ঝরনা ও অথৈ জলের সঙ্গে সবুজের পরিণয়। এ ছাড়া আছে রাঙামাটির প্রতীক ঝুলন্ত ব্রিজ আর শুভলং ঝরনা। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে ট্রেনের শোভন চেয়ারে খরচ পড়বে ৩৪৫ টাকা। অতঃপর চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠে পড়তে হবে কাপ্তাইগামী বাসে। এখানে জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৮০-১২০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!