অনলাইন ডেস্ক : ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এ ক্ষেত্রে রক্তনালি থেকে প্লাজমা বের হয়ে যায়। এতে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে কার্যকারিতা হারিয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু মারাত্মক হলে শরীরে অতিরিক্ত ডেঙ্গু ভাইরাস লোডের কারণে বিভিন্ন কোষ থেকে অতিমাত্রায় সাইটোকাইন নিঃসরিত হয়।

আর এ প্রো-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনস ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও শক সিনড্রোম হওয়ার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। ভিটামিন ডি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও দ্রুত রোগমুক্তিতে ভূমিকা রাখে। ডেঙ্গুর জটিলতা সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ে তা কমাতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন—
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান

মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড, ঢাকা ভিটামিন ডি মানবদেহে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোষের পরিমাণ কমায়, যা প্রকারান্তরে বিভিন্ন প্র-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনসের নিঃসরণ কমায়। ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা হ্রাস পায় এবং যা শরীরে দ্রুত ভাইরাস বৃদ্ধি হতে বাধা দিয়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য দেশের প্রায় ৭৫-৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ভিটামিন ডির স্বল্পতায় ভুগছেন।

ডেঙ্গু সংক্রমিত রোগীদের নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে দৈনিক ৪০০০ ইউনিট হারে ১০ দিন অথবা এক ডোজ ২০০০০০ ইউনিট ভিটামিন ডি দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় কমেছে। যেহেতু ভিটামিন ডি ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে, তাই আমাদের লক্ষ হবে, ডেঙ্গু আক্রান্ত সবার শরীরে যেকোনো উপায়ে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডির জোগান নিশ্চিত করা।

শরীরের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ ভিটামিন ডি আসে সূর্যের আলো থেকে। ২০ শতাংশের কম আমরা পেতে পারি খাদ্য উপাদান থেকে, যেমন : মাগুর, স্যালমন মাছ, দুধ-ডিমে। মূলত ভিটামিন ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকলেই চলে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে যে সময়টা, সেই সময়ের রোদ ভিটামিন ডির খুব ভালো উৎস।
ভিটামিন ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে। সে ক্ষেত্রে পোশাক বা সানস্ক্রিন সরাসরি ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে বাধা দেয়। তাই মুখে সানস্ক্রিন মেখে বের হলেও হাত-পা বা শরীরের অন্য কোনো স্থান যেন উন্মুক্ত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সংবাদদাতা/ ইলিয়াস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!