নিরাক হাসান প্রেম: করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি তুলেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। একইসঙ্গে যেসব মালিকরা মেস ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল তাদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিশেষ ভর্তুকি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সংগঠনটির নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে তারা।
ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সভাপতি শুভ দেব বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে চার মাসের অধিক সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ । কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশই অনাবাসিক অর্থাৎ মেসে থাকেন। মহামারিকালীন অনেক শিক্ষার্থী পরিবারের উপার্জন কমে গেছে। অনেক পরিবারের উপার্জন একেবারেই বন্ধ। বহু শিক্ষার্থী আছেন যারা পার্টটাইম চাকুরী কিংবা টিউশনি করে নিজের লেখাপড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচের ব্যবস্থা করেন। অনেকে ছাত্রাবস্থায় পরিবারের আর্থিক দায়িত্বও পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু চলমান সময়ে টিউশনি এবং উপার্জন একেবারেই বন্ধ থাকার কারণে বহু শিক্ষার্থী চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
তিনি আরো বলেন, চলমান মহামারির সময়ে সমাজের আর সকল মানুষের মতো শিক্ষার্থীরাও চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ভয় এবং হতাশার মধ্যে দিন পাড় করছেন। এর মধ্যে মেস ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থী বিপাকে পড়েছেন। একদিকে আর্থিক সংকট অন্যদিকে মেস মালিকদের তাগাদায় প্রাত্যহিক জীবনযাপনে নেমে এসেছে চরম অশান্তি ও দুঃশ্চিন্তা। করোনা মহামারী সময়ে অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার খাদ্য সংকটে পড়েছেন। ন্যূনতম চিকিৎসা এবং খাদ্যের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। আর্থিক সংকটে নিমজ্জিত পরিবারগুলোর পক্ষে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ বা মেস ভাড়া নির্বাহ করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সেই সাথে যেসব শিক্ষার্থী নিজে উপার্জন করে তার সার্বিক ব্যয় নির্বাহ করতো তাদের উপার্জন বন্ধ হওয়ায় তারা এখন সীমাহীন সংকটে নিমজ্জিত।
শুভ বলেন, আমাদের সংগঠন মনে করছি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। একই সাথে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া অন্তত ৫০ শতাংশ কমানো বা মওকুফ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি আমরা এও মনে করি, শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া কমালে অনেক মেস মালিকও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যে সকল মেস মালিক কেবল মেস ভাড়ার উপর নির্ভরশীল, যাদের উপার্জনের অন্য কোন সংস্থান নেই তাদের জন্য বিশেষ ভর্তুকি দরকার। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই ভর্তুকির ব্যবস্থা করার দাবি জানান এই ছাত্র নেতা।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা আপনাদের দাবির সাথে একমত আছি। আমরা চেষ্টা করবো সমাধানের জন্য।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশন মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ফারহানা মানিক মুনা, মহানগর কমিটির সম্পাদক ইমরান হোসেন জাহিদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সংগঠিক রাকিবুল ইসলাম ইফতি প্রমুখ।
বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/নিরাক