বুধবার ১৮ বৈশাখ, ১৪৩১ ১ মে, ২০২৪ বুধবার

এবার সবজিতে ভোক্তার নাভিশ্বাস

অনলাইন ডেস্ক:- বাজারে ডাল, চিনি, ছোলা ও ভোজ্যতেলের পর এবার সব ধরনের সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে।বিশেষ করে ইফতারে ব্যবহৃত সবজি ও পণ্যের দাম বেশি বেড়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা।সপ্তাহ ব্যবধানে শসা ও টমেটোর দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।

এ ছাড়া নতুন করে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। লকডাউনের কারণে চট্টগ্রামে দেশের বৃহত্তম পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে লেনদেন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য অর্ধেকে নেমে এসেছে।এমন অবস্থা চলতে থাকলে সরবরাহ চেইন অনেকটা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

রাজধানীর কাওরানবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ও নয়াবাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে শুক্রবার দেখা যায়, প্রতিকেজি পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা। প্রতিকেজি শসা বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৮০-১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৫৫-৬০ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি শসা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়।

রাজধানীর খুচরা বাজারে এদিন প্রতিকেজি সজনে ডাঁটা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। প্রতিকেজি পটোল বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটি শুক্রবার ৭০-৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। এ ছাড়া ৪০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিম প্রতিকেজি আবারও ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। প্রতিকেজি ধুন্দুল বিক্রি হয়েছে ৬০-৮০ টাকা। সাত দিন আগে ছিল ৪০-৫০ টাকা। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। সাত দিন আগে ছিল ৪০ টাকা। 

এদিকে সবজির পাশাপাশি সব ধরনের শাকের দামও বেড়েছে। চট্টগ্রামে পাইকারিতে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম কমলেও খাতুনগঞ্জে খুচরা ব্যবসায়ীরা গলাকাটা দাম আদায় করছেন। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ২৭ টাকা হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা। পাইকারিতে ছোলা মনপ্রতি ২২০০-২২৫০ টাকা। কেজিপ্রতি ৬০ টাকার কম। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করছে ৭০ টাকার বেশি। নগরীর কাঁচাবাজারগুলোয় ৫০ টাকা কমে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। 

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, এই বাজারে প্রতিদিন পণ্য নিয়ে শত শত ট্রাক প্রবেশ করত। পাশাপাশি শত শত টন পণ্য নিয়ে বিভিন্ন জেলায় এখান থেকে ট্রাক বের হতো। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল অস্বাভাবিক রকম কমে গেছে। ব্যাংকিং চ্যানেলেও লেনদেন সীমিত করা হয়েছে। বড় অঙ্কের চেকের ক্লিয়ারিংও কার্যত বন্ধ। এসব কারণে এই বাজারে বৃহদাকারে পণ্য বেচাকেনা বা সরবরাহ নেই বললেই চলে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে তারা এ-ও বলছেন, বাজারে খাদ্যপণ্যের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক না-থাকলে এই মজুত কোনো কাজে আসবে না। মজুত খুচরা পর্যায়ে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এই সংকটকে পুঁজি করে বাড়ছে দাম।

খাতুনগঞ্জ হামিদউল্লাহ মিয়াবাজার (পেঁয়াজ) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, লকডাউনের পর থেকে পাইকারিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র কিনতে আসছেন না। এখন গলাকাটা দাম আদায় করছেন চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী। তারা প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম কেজিপ্রতি ৪-১০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে। একইসঙ্গে তারা সরকারের নির্দেশনা মানছেন না। বেলা ৩টার পর দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও তারা দোকান বন্ধ রাখছেন না। এদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিষেরবাঁশী.কম / ডেস্ক / রূপা

Categories: অর্থনীতি,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.